ন্যাশনাল ডেস্ক : সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা ও তিনজনকে হত্যার দায়ে জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সুপ্রিমকোর্টে রিভিউয়ের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ৫ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী মুফতি হান্নানসহ তিনজনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে গেছে। এই পরোয়ানার কপি বিচারিক আদালত ও কারাগারে যাবে।
কারা কর্তৃপক্ষ পরোয়ানার কপি হাতে পেয়ে তিনজনকে পড়িয়ে শুনাবেন। এরপর এই তিন জঙ্গি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। গত ১৯ মার্চ এই তিন জঙ্গি নেতার ফাঁসি রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন। সে খারিজ আদেশের রায়ের কপি আজ প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৭ ডিসেম্বর এই মামলায় মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির আপিল খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ।
মুফতি হান্নান ছাড়া মামলার অপর দুই আসামি হলেন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামি বাংলাদেশের (হুজি-বি) সদস্য শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন। একই মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় বিচারিক আদালতে, যা হাইকোর্ট বহাল রাখেন। তারা হলেন মুফতি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি ও মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল। এই দুজন বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেননি।
এক যুগ আগে ২০০৪ সালের ২১ মে ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। এ সময় তিনি সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে বের হচ্ছিলেন।
হামলায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক কামাল উদ্দিনসহ তিনজন নিহত হন। আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সভাপতি প্রয়াত আবদুল হাই খান, স্থানীয় সাংবাদিক মহিবুর রহমানসহ ৭০ জন আহত হন।
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মো. আফজাল মুফতি হান্নানসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড ও দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) হাইকোর্টে শুনানির জন্য আসে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। এতে বিচারিক আদালতে দেওয়া দণ্ড বহাল থাকে। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা তিন আসামির মধ্যে হান্নান ও শাহেদুল আপিল করেন।