দেশের খবর: রাজধানীর ধানমন্ডির সাইন্সল্যাব এলাকায় শনিবার রাতে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে এক এএসআই ও এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- এএসআই শাহাবুদ্দিন (৩৫) ও কনস্টেবল আমিনুল (৪০)। এর মধ্যে শাহাবুদ্দিনের দুই পায়ে এবং আমিনুলের হাতে বোমার স্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হন। পরে দুইজনকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বলেন, আমিনুল হাতের আঙুলে ও শাহবুদ্দীন দুই পায়ে আঘাত পেয়েছেন। তাদেরকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনার পর সাইন্সল্যাব মোড়ের ঘটনাস্থল কর্ডন করে রেখেছে পুলিশ। ঘটনার পর ওই রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ধানমন্ডির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার গাড়িকে প্রটেকশন দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশের একটি টিম। প্রটেকশন গাড়ি ছিল মন্ত্রীর গাড়ির পেছনে। সাইন্সল্যাবরেটরি এলাকায় যানজট থাকায় প্রটেকশন গাড়ি থেকে এএসআই শাহাবুদ্দিন নেমে ট্রাফিক কনস্টেবল আমিনুলকে নিয়ে রাস্তা ক্লিয়ার করেন। মন্ত্রীর গাড়ি মোড় পেরিয়ে যাওয়ার সময় তারা প্রটেকশন গাড়িতে উঠতে যান। আর ওই সময়ই কেবা কারা পুলিশের উদ্দেশে বোমা ছুড়ে মারে। এতে দুইজন পুলিশ আহত হন।
ঘটনার খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘কে বা কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জঙ্গি হামলা নাকি অন্য কোনো ঘটনা সেটা তদন্ত না করে বলা যাবে না।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাইন্সল্যাবরেটরি মোড়ে ঘটনার আগে বেশ যানজট ছিল। হঠাৎ করেই বোমা বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তায় পুলিশের রক্ত পড়ে থাকে। আহত পুলিশ সদস্যদেরকে অন্যরা- হাসপাতালে নিয়ে যান। এর পর পুলিশ এসে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে কর্ডন করে রাখে।
এ বিষয়ে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান গতকাল রাতে বলেন, ‘ককটেলের আঘাতে দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল গুলিস্তানে ট্রাফিক পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমার বিস্ফোরণে দুই ট্রাফিক পুলিশ এবং কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য আহত হন। গত ২৬ মে রাতে মালিবাগে এসবি অফিসের সামনে একটি পিকআপে বোমা হামলায় ট্রাফিক পুলিশের এএসআই রাশেদা আক্তার এবং রাস্তায় থাকা রিকশাচালক লাল মিয়া আহত হন।
গত ২৩ জুলাই গভীর রাতে সচিবালয়ের পাশে পল্টন মোড়ের পুলিশ বক্স ও মানিক মিয়া এভিনিউর গোল চত্বরের খামার বাড়ি পুলিশ বক্সের পাশে থেকে বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিটি ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) নামে কথিত দায় স্বীকার করা হয়। এসব ঘটনায় স্থানীয় জঙ্গিদের সন্দেহ করা হলেও তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।