কে, এম, রেজাউল করিম দেবহাটা ব্যুরো :
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
“কুঁড়ে ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পড়ে
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।”
বাবুই হাসিয়া কহে, “সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”
-স্বাধীনতার সুখ কবিতায় কবি রজনীকান্ত সেন এভাবেই চিত্রিত করেছিলেন স্বাধীন সৃষ্টির সুখকে। কবি চেঁচে থাকলে আজ তার চোখে জল থাকতো, বাবুই পাখিদের হারিয়ে যাওয়া দেখে।
এখন আর চোখে পড়ে না বাবুই পাখি ও তার তৈরি দৃষ্টিনন্দন সেই ছোট্ট বাসা এবং বাসা তৈরীর নৈসর্গিক দৃশ্য। হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বয়নশিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা পড়ে যেত না। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসাটি শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি যা টেনেও ছেঁড়া সম্ভব নয়। একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সারি সারি উঁচু তালগাছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা দেখা যেত। এখন তা আর সচরাচর চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেই দৃষ্টি ভোলানো পাখিটিকেও তার নিজের তৈরি বাসা যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো ফুটিয়ে তুলত, তা আজ আমরা হারাতে বসেছি। বাবুই পাখি বাসা তৈরির পর সঙ্গী খুঁজতে যায় অন্য বাসায়। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুইকে সাথী বানানোর জন্য নানা ভাবে ভাব-ভালোবাসা নিবেদন করে এরা। বাসা তৈরীর কাজ অর্ধেক হলে কাক্সিক্ষত স্ত্রী বাবুইকে সে বাসা দেখায়। বাসা পছন্দ হলে কেবল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্ত্রী বাবুই পাখির বাসা পছন্দ হলে বাকি কাজ শেষ করতে পুরুষ বাবুই পাখির সময় লাগে চার দিন। স্ত্রী বাবুই পাখির প্রেরণা পেয়ে পুরুষ বাবুই মনের আনন্দে শিল্পসম্মত ও নিপুণভাবে বিরামহীনভাবে বাসা তৈরির কাজ শেষ করে। প্রেমিক বাবুই যত প্রেমই দেখাক না কেন, প্রেমিকা ডিম দেওয়ার সাথে সাথেই প্রেমিক বাবুই আবার খুঁজতে থাকে অন্য সঙ্গী। পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি বাসা তৈরি করতে পারে।
ক্ষেতের ধান পাকার সময় হলো বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবার পরপরই বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য স্ত্রী বাবুই ক্ষেত থেকে দুধ ধান সংগ্রহ করে।
বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতির এক অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। আধুনিক যুগের মানুষে আবিস্কৃত বিভিন্ন কীটনাশক অতিমাত্রায় ফসলে ব্যবহারের ফলে স্ত্রী বাবুই পাখি বাচ্চার খাওয়ানোর জন্য ক্ষেত থেকে যে দুধ ধান সংগ্রহ করছে সেই দুধ ধানের বিষাক্তক্রিয়ায় বাচ্চা বড় হওয়ার আগেই বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করছে।
এছাড়াও বসতবাড়ি নির্মানের জন্য অতিমাত্রায় তাল গাছ উজাড়ের ফলে বাসা তৈরী করতে পারছে না বাংলার নিপুণ কারিগর বাবুই পাখি। যার ফলে প্রকৃতির বয়নশিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের কারিগর নামে সমধিক পরিচিত বাবুই পাখি ও তার অপরূপ শিল্পসম্মত বাসা এখন আর চোখে পড়ে না।
বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতির এক অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। আধুনিক যুগের মানুষে আবিস্কৃত বিভিন্ন কীটনাশক অতিমাত্রায় ফসলে ব্যবহারের ফলে স্ত্রী বাবুই পাখি বাচ্চার খাওয়ানোর জন্য ক্ষেত থেকে যে দুধ ধান সংগ্রহ করছে সেই দুধ ধানের বিষাক্তক্রিয়ায় বাচ্চা বড় হওয়ার আগেই বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করছে।
এছাড়াও বসতবাড়ি নির্মানের জন্য অতিমাত্রায় তাল গাছ উজাড়ের ফলে বাসা তৈরী করতে পারছে না বাংলার নিপুণ কারিগর বাবুই পাখি। যার ফলে প্রকৃতির বয়নশিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের কারিগর নামে সমধিক পরিচিত বাবুই পাখি ও তার অপরূপ শিল্পসম্মত বাসা এখন আর চোখে পড়ে না।