ভিন্ন স্বাদের খবর: অভিযানের নামে জেলে ভাড়া করে ইলিশ ধরার দায়ে বরিশালের বন্দর থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও দুই কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোববার রাতে বাউফলের ধুলিয়া সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের সঙ্গে ইলিশ ধরার সময় ৪ জেলেসহ পুলিশের দুই কনস্টেবলকে হাতেনাতে আটক করে কালাইয়া ফাঁড়ি পুলিশ। পরে বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বাউফলে গিয়ে আটককৃতদের ছাড়িয়ে আনেন।
বরখাস্ত হওয়া তিন পুলিশ সদস্য হলেন- বরিশাল বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিস, কনস্টেবল মোহম্মদ আলী ও জুলফিকার আলী। এদের মধ্যে কনস্টেবল মোহম্মদ আলী ও জুলফিকার আলী রোববার রাতে বাউফলের কালাইয়া ফাঁড়ি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন এবং এসআই আনিসসহ অন্যরা পালিয়ে যান। আটকৃতদেরর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল ও ইলিশ জব্দ করা হয়।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, রোববার সন্ধ্যার পর বাউফল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও কালাইয়া ফাঁড়ি পুলিশ তেঁতুলিয়া নদীতে টহলে যায়। এসময় ধুলিয়া পয়েন্টে ইলিশ ধরা অবস্থায় একটি ট্রলার থেকে বরিশালের বন্দর থানার কনষ্টবল জুলফিকার আলী ও মোহাম্মদ আলীসহ ৪ জেলেকে আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে থাকা আরও দুটি বোটে এসআই আনিসসহ অন্যরা পালিয়ে যান।
কালাইয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক সোহাগ ফকির জানান, আটককৃত দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট ৬ জন পুলিশ সদস্য একটি স্পিডবোট, একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও কাঠের তৈরি নৌকা নিয়ে ইলিশ ধরছিল। স্পিডবোট ও কাঠের নৌকায় থাকা পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে যায়। আটক হওয়া ৪ জেলে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদেরকে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরীতে মাছ ধরতে আনা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। পরে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন নৌ ফাঁড়িতে এসে আটককৃত দুই পুলিশ সদস্যকে নিয়ে যান।
বরিশাল বন্দর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, এসআই আনিসসহ দুই পুলিশ সদস্য ভুলক্রমে বাউফল জলসীমায় ঢুকে পড়েন। তারা অনুমতি ছাড়াই অভিযানে গিয়েছিলেন। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় জেলে আটকের পর ৬৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে এক সহকারী উপ পরিদর্শকসহ দু’জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বরিশাল জেলা পুলিশ। মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে গত ৯ অক্টোবর থেকে নদী-সাগরে ইলিশ নিধনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এতে নদীতে অভিযানের নামে প্রতিবছরের মতো এবারও পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।