নিজস্ব প্রতিবেদক : শিবপুর ইউনিয়নের খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক ও ৫ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে স্কুলে পাঠগ্রহণ করছে। যে কোন সময় ঝুকিঁপুর্ণ ভবনটি ধ্বসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ১৮নং খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯২৫ ইং সনে স্থাপিত হয়। ১টি ভবন দিয়েই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিল। পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় ২০০৬-০৭ অর্থ বছরে এল.আই.জিডির বাস্তবায়নে ও পি.ডি.পি-২ এর আওতায় নতুন একটি ভবন নির্মিত হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৬১ জন। ফলে নতুন ভবনে ছাত্রছাত্রীদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় পুরাতন ভবনে প্রাক প্রাথমিক ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাস নিতে হয়। তাছাড়া শিক্ষকরা নতুন ভবনে অফিস না করে পুরাতন ভবনে অফিস করে যাতে করে নিজেরা ঝুঁকির মধ্যে থেকেও ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদ স্থানে কাস করাতে পারে। কিন্তু খানপুর গ্রামের ও পাশ্ববর্তী কয়েকটি অঞ্চলের সকল ধর্মের মানুষের একমাত্র শিক্ষার জায়গা খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি, একারনে ছাত্রছাত্রীদের নতুন ভবনে সংকুলান না হওয়ায় পুরাতন ভবনে প্রাক প্রাথমিক ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাস নেওয়া হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবনে ৯০ জনের ও বেশি শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা হচ্ছে। এ সময় ওই ভবনের বিমে ফাটল দেখা যায়। এ ছাড়া ভবনের প্লাষ্টারও খসে পড়তে দেখা যায়। তিন কক্ষের কাস রুম ও এক কক্ষের অফিস রুম এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাস রুমে ছাত্র-ছাত্রীদের কাস করাচ্ছে। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বৃষ্টি হলেই বাজাতে হয় ছুটির ঘণ্টা। অনেক সময় বৃষ্টিতে বারান্দায় আবার অন্যান্য সময় মাঠে অথবা গাছতলায় ছাত্রছাত্রীদেরকে শিক্ষকদের কাস করাতে হয়। প্রতিটি কক্ষের ছাদ ও পিলারের লোহার খাঁচা ও রড দৃশ্যমান। এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন মেরামত কিংবা নতুন ভবন নির্মাণ না হলে দুর্ঘটনাসহ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ‘কাস করতে ভয় লাগে। কিন্তু স্যাররা কাস করতে বলে তাই কাস করি।’ একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্যারদের জন্য কাস করছি। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে স্যাররাই দায়ী থাকবেন।’ তবে বিদ্যালয়ের প্রধান জাকির হোসেন বলেন, বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে।