আশাশুনি ব্যুরো : আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাশ রুমের অভাবে কাশ পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। টিনের ঘর ও জরাজীর্ণ কক্ষে প্রতিকূলতা ও জীবনের মায়া ত্যাগ করে কাশে বসে কাশ করতে হচ্ছে শিশুদের। উপজেলার পুরাতন স্কুলগুলোর মধ্যে এই বিদ্যালয় একটি। ১৯৪০ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত। এই বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিপির উচ্চ পদে কর্মরত এবং দেশ-বিদেশে বহু প্রতিষ্ঠান ও বিভাগে কৃতিত্বের সাথে চাকুরীরত আছেন। বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে সরকারিকরণ করা হয়। এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করে স্কুল চলে এসেছে। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ১৯৯৬ সালে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন সরকারিভাবে নির্মীত হয়েছিল। পরবর্তীতে কাশ পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেওয়ায় সরকারি ভাবে ২ কক্ষ বিশিষ্ট আরেকটি ভবন নির্মান করা হয় ২০০২ সালে। এরপর কাশ সুষ্ঠুভাবে চলে আসলেও গত ৬ মাস পূর্বে পুরনো ভবণটি (৪ কক্ষ বিশিষ্ট) পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে ভবনটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। গাছ তলা আর খোলা মাঠে কাশ পরিচালনা করতে করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কান্ত হয়ে পড়লে এসএমসি সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে ২ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করেছেন। তাতেও কক্ষ সংকট কাটেনি। কক্ষ সংকটের পাশাপশি টিনের ঘরে রৌদ্রের তাপে ঘর্মাক্ত ও মারাক্তক অস্বস্তি নিয়ে এবং বর্ষার সময় বৃষ্টি ঝরা টিনের বিকট শব্দের কারনে শুনতে না পাওয়ার অসহ্য পরিবেশে কাশ চালান হচ্ছে। অপরদিকে ২০০২ সালে নির্মিত দু’কক্ষের বিল্ডিংটি (একটি কক্ষ কাশ ও আরেকটি অফিস হিসাবে ব্যবহৃত) ইতিমধ্যে হয়ে পড়েছে জীর্ণশীর্ণ। ঝুঁকি আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। স্বনামধন্য বিদ্যালয়টি ২৪০ জন ছাত্রছাত্রীর পদভারে আনন্দঘন পরিবেশে চলার কথা, সেটি এখন শিক্ষাদানের পরিবেশ বঞ্চিত হয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। শিশু বান্ধব প্রাইমারী স্কুল পরিচালনার জন্য সরকার ও শিক্ষা বিভাগ যখন এগিয়ে চলেছে, তখন কক্ষ সংকটে মাঠে কিংবা গাছ তলায় বসে কাশ পরিচালনা আর রোদ-গরমের সাথে যুদ্ধ করে এবং বৃষ্টির মৌসুমে প্রকৃতির বিকট শব্দের একাকার পরিবেশে কাশ পরিচালনার ঘটনা সত্যি বেমানান। জেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অনুধাবন করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন এ দাবি এলাকাবাসী সকলের।