অনলাইন ডেস্ক: আবির্ভাব হওয়া কোভিড-১৯ (করোনা) ভাইরাস এখন হানা দিয়েছে ইউরোপের দেশে দেশে। এশিয়ার দেশগুলোতে করোনার প্রাদুর্ভাব দিন দিন আরও পোক্ত হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এরই মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য উড়িয়েছে বিপদসংকেত। কারণ এ অঞ্চলের দেশগুলো প্রতিটিই জনবহুল। আর করোনা ছড়ায় মানুষ থেকে মানুষে। জনবহুল এসব দেশে করোনা ভাইরাস জ্যামিতিক হারেই ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তাই করোনা ভাইরাসে ব্যাপকতা এড়াতে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ডব্লিউএইচও আগেই বাংলাদেশকে উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর তালিকা অন্তর্ভক্ত করেছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে আবারও বিপদসংকেত পাঠিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রায় ৫০০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং জনবহুল এসব দেশে প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জোরদার করতে হবে নজরদারি।
সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক ডক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল সিং এক বিবৃতি বলেন, পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে খুব দ্রুত। কখনো পৃথিবীর এই প্রান্ত, কখনো অন্যপ্রান্ত ছুটছে করোনা। জনবহুল দেশগুলোতেই এই ভাইরাস ডালপালা মেলে দিতে বেশি পছন্দ করছে। তাই দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ৮ টি দেশে করোনা মহামারির অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হুমকির মুখে থাকা দেশগুলোতে প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। করোনা যেন নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে যেতে না পারে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, ধারণার চাইতেও বেশি সংখ্যক মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ক নজরদারি কার্যকরভাবিই হচ্ছে। তবে জনবহুল দেশগুলোত কোভিড-১৯ প্রতিহত করতে যে আরও কঠোর ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে সেটিও স্পষ্ট।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে শনাক্তকরণ, পরীক্ষা, চিকিৎসা, আইসোলেশন ও রোগীর সঙ্গে কারা মেলামেশা করেছিলেন তাদের শনাক্তের ওপর। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এসব বিষয়ে নজরাদারি আরও জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থটি।
ডাব্লিউএইচইর মুখপাত্র ড. ক্ষেত্রপাল সিং হাত ধোয়া, হাঁচি ও কাশি নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিকভাবে মানুষ থেকে দূরে থাকার ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, শুধু এগুলো মেনে চলার মাধ্যমে সংক্রমণ কমানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়। সামাজিকতার বন্ধনে থাকা বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে যদি ভাইরাস ছড়িয়েই পড়ে, সেক্ষেত্রে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করতে দেশগুলোকে আরও শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তখন জরুরি অবস্থায় নেয়া পদক্ষেপের পরিধি এবং গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে। জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করতে স্বাস্থ্যসেবা এবং হাসপাতালের নেটওয়ার্ক তৈরি করা প্রয়োজন হবে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে এবং ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সামান্য আক্রান্তদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত আইসোলেশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আপডেট করা তালিকায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে আটটিতে কোভিড-১৯ নিশ্চিতভাবে শনাক্ত হয়েছে। এসব দেশের মধ্যে থাইল্যান্ডে ১৭৭ জন, ইন্দোনেশিয়ায় ১৩৪ জন , ভারতে ১২৫ জন, শ্রীলঙ্কায় ১৯ জন, বাংলাদেশে ১৪ জন, মালদ্বীপে ১৩ জন, নেপালে ১ জন এবং ভুটানে ১ জন।