দেশের খবর: ‘ভাই আপনারা তো অনেক কিছু নিয়ে রিপোর্ট করেন, আমাদের মত অসহায় ব্যাংকারদের নিয়ে কিছু করতে পারেন না? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আজ মাঠে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, প্রশাসন, সাংবাদিক এবং ব্যাংকার। অথচ আমাদের প্রতিদিন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথাগুলো বললেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস রোধে বাংলাদেশেও বন্ধ রয়েছে অফিস আদালত। সরকার ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে। এমন পরিস্থিতিতেও সকাল ১০টা-বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ঝুঁকি নিয়েও ব্যাংকারদের অফিস করতে হচ্ছে। অফিস যাওয়া-আসার পথে তাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। রাস্তায় বাধার মুখে পড়ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর।
বিড়ম্বনার প্রমাণ হিসেবে ওই ব্যাংকার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একটি ভিডিও পাঠান। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, অফিস যাওয়ার পথে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন এক নারী ব্যাংকার। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যেমন জনগণের সেবা করছেন। তেমনি আমরাও গ্রাহককে সেবা দিচ্ছি। গ্রাহকদের সুবিধার্থে সীমিত পর্যায়ে ব্যাংক খোলা রাখার ব্যাপারে সরকারি প্রজ্ঞাপনের কথা আপনারা কি জানেন না? করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি জেনেও তো সন্তানদের রেখে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে।’ ভিডিওটিতে বেশ কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা চলতে দেখা যায়।
ছুটির মধ্যে এভাবে অফিস করতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ব্যাংককর্মীদের। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টাও ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশনা যায়নি বলেও সন্দেহ অনেক ব্যাংকারের। ফলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা আইন-শৃংঙ্খলাবা বাহিনীর কর্মীরা ব্যাংকারদের বিষয়ে কিছুই জানেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাদের কাছে ব্যাংক খোলা রাখার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ সোহাগ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি ব্যাংক খোলা থাকার বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে গোটা দেশে জানিয়ে দেয় তাহলে আর সমস্যা হবে না। আবার সংবাদপত্র বা অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমেও বিষয়টি প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।