দেশের খবর: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জানাজায় লোক সমাগমের ঘটনায় সার্কেল এএসপি, ওসিসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার (১৯ এপ্রিল) পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানার এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে ওই ঘটনায় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ে সরাইল থানার ওসি শাহদাৎ হোসেন টিটুকে প্রত্যাহার করা হয়। শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে তাকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে যুক্ত করতে বলা হয়। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আলাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সরাইলের ঘটনা তদন্ত করতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) কে সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)। কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিল ২০২০ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লকডাউন উপেক্ষা করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই লাখো মানুষের জমায়েত হয়েছিল খ্যাতিমান ইসলামী আলোচক ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায়। শনিবার সকালে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় প্রশাসন এ অবস্থায় নীরব ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকালে জামিয়া রাহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা এবং আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়তলা মাদ্রাসায় আসতে থাকে লোকজন। পরে সকাল ১০টার দিকে জানাজা শুরু হয়। মাদ্রাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে যায় মানুষ। একদিকে বিশ্বরোড মোড় হয়ে সরাইলের মোড় পর্যন্ত, অন্যদিকে আশুগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকে মানুষের ঢল। এছাড়া ওই এলাকার আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল। তবে সেখানে কিছু পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিলেন এক রকম নীরব দর্শক।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাওলানা জোবায়ের আহমেদ আনসারী। জোবায়ের আহমেদ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির এবং বেড়তলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। এছাড়া তিনি একাধিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ইসলামি আলোচক হিসেবে তার বিশ্বজুড়ে খ্যাতি রয়েছে।