দেশের খবর: বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে দেশের ৬১টি জেলায়। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এখনও চারটি জেলা করোনামুক্ত। অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়হীনতায় ভুল তথ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত দেশে আক্রান্তের তালিকায় ছিল ৫৮টি জেলা। শনিবারের (২৫ এপ্রিল) পরিসংখ্যান অনুযায়ী আরও দুই জেলায় সংক্রমিত রোগী ধরা পড়েছে। এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা জানান, ‘২৪ এপ্রিলের তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখছি আমাদের এখন আক্রান্ত জেলা ৬০টি। নতুনভাবে আক্রান্ত হয়েছে বরিশাল বিভাগের ভোলা এবং রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলা। এখন শুধু বাকি আছে চারটি জেলা। সেগুলো হলো, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ঝিনাইদহ ও সাতক্ষীরা। এই চারটি ছাড়া সারা বাংলাদেশের সব জেলাতেই কোভিড আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।’
তবে শনিবার ঝিনাইদহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ের সাড়ে চার ঘণ্টা আগে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম জানান, ‘যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯টি নমুনার ফলাফল পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের একজন নারী ও একজন পুরুষ। যাদের বয়স ৩২ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। আক্রান্ত ওই নারীর বাড়ি সদর উপজেলার, আর পুরুষ রোগীটির বাড়ি জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায়। তারা দুজনই সম্প্রতি অন্য জেলা থেকে ঝিনাইদহে এসেছেন।’
সেলিনা বেগম জানান, ‘সদর উপজেলায় যে নারীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে তিনি গত ২০ এপ্রিল ঢাকা থেকে ঝিনাইদহে আসেন। তার স্বামীরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে স্বামীর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। কালীগঞ্জের পুরুষ রোগীটি এসেছেন মাদারীপুর থেকে। তারা কোন অবস্থায় আছেন তা দ্রুত খোঁজ-খবর নিয়ে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘ঝিনাইদহ জেলা এতদিন করোনামুক্ত থাকলেও এখন রোগী শনাক্ত হওয়ায় জেলাকে লকডাউন করার জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে’, বলেন সিভিল সার্জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩০৯ জন, মারা গেছেন নয়জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৯৯৮ জনে। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪০ জন। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে ঢাকা জেলায়।এরপরেই রয়েছে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী।
দেশে গত আট মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তিনজন রোগীকে শনাক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল সেদিন। পরের ছয়দিন নতুন কোন রোগী ধরা পড়েনি। এরপর তিনদিন ছাড়া প্রতিদিন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে পরীক্ষার মাত্রা বাড়ায় চার এপ্রিলের পর থেকে আক্রান্তদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। সর্বোচ্চ ৫০৩ জন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৪ এপ্রিল। শনিবার ৩০৯ জন আক্রান্তের খবর দিলেও নাসিমা সুলতানা জানান, আগের দিন শুক্রবার থাকায় বেসরকারি কিছু হাসপাতালের পরীক্ষার ফলাফলের তথ্য তাদের কাছে পৌঁছেনি।