বিদেশের খবর: দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত ইয়েমেন দুর্ভিক্ষের পাশাপাশি এতদিন লড়ে আসছে কলেরা মহামারির সঙ্গে। এবার সেখানে নতুন যোগ হয়েছে করোনাভাইরাস। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা গত সোমবার জানিয়েছে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর হার ২০.৭৭ শতাংশ।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, আমরা মনেকরছি করোনায় আক্রান্ত হয়ে শতশত মানুষ বাড়িতেই মারা যাচ্ছে। কারণ এখানে পর্যাপ্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা নাই, চিকিৎসা সরঞ্জামও নাই। একটি অদাপ্তরিক সূত্র জানায়, এসব মৃত্যুর বেশিরভাগই হচ্ছে হুতি বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায়।
১০ এপ্রিল প্রথম দেশটিতে করোনা ধরা পড়ে। ওয়াল্ডোমেটারের হিসাবে দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪১৯ জন, মারা গেছে ৯৫ জন। দেশটিতে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক আমাল মনসুর বলেন, ‘করোনার মৃত্যুর এই তথ্য একেবারে কম। কারণ এখানে করোনা পরীক্ষার খুব একটা ব্যবস্থা নাই বললেই চলে।’ মানসুর বলেন, ‘সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় এডেনে। সেখানে প্রতিদিন কয়েকডজন মানুষ মারা যাচ্ছে। করোনায় পুরো দেশই ভয়াবহ বিপর্যায়ের মুখে, যা কারো নজরে পড়ছে না।’
দেশটিতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া কলেরায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ পর্যন্ত কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে ২৩ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৪ হাজার মানুষ মারা গেছে বলে সরকারি হিসাবে বলা হয়। জাতিসংঘের উদ্বেগ হচ্ছে, দেশটিতে করোনায় জনসংখ্যার অর্ধেক বা এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। অন্তত ৪০ হাজার মানুষ মারা যাবে, যা ভয়াবহ।
ইয়েমেনে ইউএনএইচসিআর এ কর্মকর্তা ডা. জ্যঁ-নিকোলাস বেয়াজ বলেন, ‘এখানে অত্যন্ত ভয়াবহ পরিস্থিতি। যা থেকে মনেহয় বিশ্ব মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’ জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ডব্লিউএফপি জানায়, সবচেয়ে বেশি খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্বের পাঁচ দেশ। এর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে ইয়েমেন। বর্তমানে দেশটিতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। ফলে দেশটির জন্য জরুরিভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।
সূত্র: ডয়েচে ওয়েলে, মিডেলইস্ট মনিটর