অনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন উৎপাদনে পাঁচ প্রতিযোগীকে চূড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় নামা প্রায় এক ডজন কোম্পানি বা গ্রুপ থেকে বাছাই করে পাঁচটিকে নির্বাচিত করেছে ওয়াশিংটন। যাদের ভ্যাকসিনে সম্ভাবনাময় ফল পাওয়া গেছে এবং যারা অল্প সময়েই বিপুল পরিমাণে ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম, মূলত তাদেরই নির্বাচিত করা হয়েছে। নির্বাচিতরা ভ্যাকসিন গবেষণায় মার্কিন সরকারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ মহামারি বিশেষজ্ঞ ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক ডা. অ্যান্থনি ফওসি গত মঙ্গলবার এক মেডিকেল সেমিনারে জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়া হবে।
নির্বাচিত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান হলো- ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক বায়োটেক ফার্ম মডার্না, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মার্কিন মেডিকেল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসন, মার্ক এবং ফাইজার। এরা প্রত্যেকেই করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে আলাদাভাবে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে মডার্না আগামী মাসেই তাদের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করবে। প্রায় একই পরিমাণে এগিয়েছে অক্সফোর্ড -অ্যাস্ট্রাজেনেকাও।
মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে মোট ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা পেয়েছে। মার্ক ও ফাইজারসহ এ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানই আরও সরকারি অর্থ পেতে যাচ্ছে। যদিও কোন গ্রুপের ভ্যাকসিন প্রকৃতপক্ষে করোনা নির্মূল করতে পারবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত দুই প্রতিযোগী মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিন ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে। অর্থাৎ স্বল্প পরিসরে মানবদেহে সম্ভাব্য করোনার ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাচ্ছে তারা। শিগগিরই তৃতীয় ধাপ অর্থাৎ বৃহৎ পরিসরে মানবদেহে এর পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তাদের গবেষকরা।
জনসন অ্যান্ড জনসন জানিয়েছে, তারা আগামী সেপ্টেম্বরে প্রথম ধাপের পরীক্ষা শুরু করবে। বাকিরা হোয়াইট হাউসের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচিত প্রতিটি গ্রুপ তৃতীয় ধাপে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের ওপর তাদের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাবে। অর্থাৎ পাঁচটি গ্রুপই তৃতীয় ধাপে পৌঁছলে অন্তত দেড় লাখ মার্কিনি তাদের পরীক্ষার আওতায় আসবেন। সেক্ষেত্রে সব বয়সের মানুষের ওপরই এর পরীক্ষা চালানো হবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তৃতীয় ধাপের কিছু পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে করোনার নতুন হটস্পট নির্বাচন করে সেখানে সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালানো হবে।