আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে গুলাম আহম্মদ (৬০) নামে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ওই ঘটনার নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সংগঠন হিন্দু যুব বাহিনীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ (বুধবার) গণমাধ্যমে প্রকাশ, হিন্দু এক তরুণীকে নিয়ে মুসলিম এক যুবককে পালাতে সাহায্য করার সন্দেহে তাকে লাঠি, রড ইত্যাদি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে ওই ঘটনার পর এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক রোশন জেকব, পুলিশের ডেপুটি মহাপরিদর্শক এবং সিনিয়র পুলিশ সুপার পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, বুলন্দশহরের পহাসু থানা এলাকায় সোহি গ্রামে একটি মুসলিম ছেলে এক হিন্দু মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই তরুণীর পরিবার থেকে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে পারেনি।
পুলিশ বলছে, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরো কিছু ব্যক্তির নাম প্রকাশ্যে আসছে। ওই ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশের একটি দল গঠন করা হয়েছে। আপাতত ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, হিন্দু যুব বাহিনীর লোকজন আম ব্যবসায়ী গুলাম আহম্মদকে লাঠি, রড ইত্যাদি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ ব্যাপারে তারা গোবিন্দর সিংসহ অন্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিহত গুলাম আহমদের ছেলে ওয়াকিল আহম্মদ এক অভিযোগে বলেছেন, সোহি গ্রামের ইউসুফ নামে এক যুবক প্রতিবেশী ফাজলপুর গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে চলে যায়। ইউসুফ আমাদের সম্প্রদায়ের হওয়ায় ফাজলপুরের লোকদের সঙ্গে আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। হিন্দু যুব বাহিনীর কর্মীরা কিছুদিন ধরে আমাদের হুমকি দিচ্ছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ ৫/৬ জন যুব বাহিনীর সদস্য বাবাকে বেদম প্রহার করে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে।
এদিকে, হিন্দু যুব বাহিনীর জেলা সভাপতি সুনীল সিং ওই ঘটনার নেপথ্যে তাদের হাত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তাদের সংগঠনে গোবিন্দর নামে কেউ নেই বলে তিনি দাবি করেছেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে তাদের কাছে এক তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর আসে। দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে তারা পুলিশকে তরুণীকে উদ্ধারের জন্য বলেছিলেন।
জেলা প্রশাসক রোশন জেকব বলেন, অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে, কাউকে রেহাই দেয়া হবে না। এলাকায় শান্তি বজায় রয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।