অনলাইন ডেস্ক : সরকারি কর্মচারীরা আর বাসা থেকে কাজ করতে পারবেন না। তাদের অফিসে উপস্থিত থেকে আগের মতোই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করতে হবে। গত সোমবার গৃহীত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে অন্যান্য মন্ত্রণালয় হোম অফিস বাতিল করে অফিসগুলোতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ পাঠাচ্ছে।
ঘরে থেকে দাপ্তরিক কাজে অংশ নেওয়া বাতিলের নির্দেশ জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন জানিয়েছেন, সরকারি সব কর্মচারীকে অফিসে উপস্থিত হয়ে যথারীতি আগের মতো কাজ করতে হবে। তবে, দুর্বল, অসুস্থ এবং গর্ভবতী মহিলাদের অফিসে যেতে হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি অফিস আদালত খুললেও উপস্থিতি কম। মাত্র ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে চলছে সরকারি দফতর ও সংস্থাগুলোর কাজ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করার কথা থাকলেও বেলা ১২টার পর থেকেই ফাঁকা হতে থাকে সরকারি দফতর ও সংস্থাগুলো। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে সীমিত সংখ্যক কর্মকর্তা কর্মচারী দিয়ে। এক্ষেত্রে হয়তো অনেক প্রতিষ্ঠানই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাই করেছে, অথবা তাদের অবৈতনিক বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। সেখানে কাজও চলছে সীমিত পরিসরে।
গত ২৫ মার্চের পর গত ৩১ মে রোববার খুলেছে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতর বাংলাদেশ সচিবালয়। ২৬ মার্চ থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার সারা দেশের সরকারি বেসরকারি সব ধরনের অফিস কার্যক্রম বন্ধ করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। শুরুতে কয়েক দিনের জন্য হলেও পরবর্তীতে কয়েক দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে তা সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত গড়ায়। ৩১ মে রবিবার থেকে সরকারি বেসরকারি অফিস খোলার অনুমতি দেয় সরকার। এরই মাঝে অতিবাহিত হয়েছে ৬৬ দিন। এই ৬৬ দিনের মধ্যে গেছে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ, পবিত্র শবে বরাত, শবে কদর ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ৩১ মে অফিস আদালত খোলার পরেও কেটে গেছে দুই মাসের বেশি সময়। এতদিনেও সচিবালয় ফিরে পায়নি তার চিরচেনা রূপ। এখনও প্রাণহীন মনে হয় পুরো সচিবালয়কে। সকালের দিকে কিছু মানুষের আনাগোনা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানেও নেমে আসে এক ধরনের নিস্তব্ধতা। বেশিরভাগ মন্ত্রীও এখন অফিসিয়াল কাজকর্ম বা মিটিং সেরে নেন অনলাইনে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সাধারণ ছুটি ৩১ মে’র পরে না বাড়ানো সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা কর্মচারী অফিসে আসবেন। এর জন্য পৃথক শিডিউল করবেন সংশ্লিষ্ট দফতর বা সংস্থাগুলো। যাদের কাজ আগে শেষ হবে, তারা অফিসে বিলম্ব করবেন না, বাড়িতে চলে যাবেন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে পুরোপুরি বিরত থাকবেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য সর্বাবস্থায় মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক চলছে সরকারি সংস্থা, দফতর ও অফিস।