রাজনীতির খবর : ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তেমন কর্মীদেরই উপহার দেবে যারা একদিন এই রাষ্ট্র ও সমাজকে পরিচালনা করবে। তিনি ছাত্রলীগের যেসব ওয়ার্ড থানা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা কমিটি এখনো হয়নি সেগুলো আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে তাগাদা দেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের গুপ্তচর ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে তেমন একটি সংগঠন হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে, যার মধ্য দিয়ে সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুপ্রেমী কর্মী সৃষ্টি হবে। এরা সবাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কিংবা মহানগরের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হবে না। এর মধ্য দিয়ে কেউ সিভিল প্রশাসনে যাবে, কেউ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশায় যাবে। তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, শেখ হাসিনার স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করতে পারে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রবেশকারী। তিনি পাকিস্তানি চর ছিলেন বলে ওই আলোচনা সভায় মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
নানক বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, যিনি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিলেন জেনারেল বেগ। এ জেনারেল বেগ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল ছিলেন। সেই কর্নেল, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়, মেজর জিয়াউর রহমানকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। কর্নেল বেগ মেজর জিয়াকে চিঠি দিয়েছিলেন। এই চিঠি প্রমাণ করে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত মেজর জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে পাকিস্তানি চর হিসেবে ঢুকিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর ফলে দেখা যায় জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে মেনে নিতে পারেননি। মোশতাক-জিয়া যেমন করে বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিল তেমনি খালেদা-তারেক, মুজাহিদ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
১৯৭৫ সালের পরিস্থিতি উল্লেখ করে নানক বলেন, আপনাদের বলতে চাই, কেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো। কেন আমরা হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারলাম না। কেন আমরা প্রতিরোধ গড়তে পারলাম না।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আমরা সবাই প্রতীক্ষায় ছিলাম, একটি প্রতিরোধ ডাকের। একটি ডাকের অভাবে সেদিন বুক চাপড়ে কেঁদেছিল বাংলার মানুষ।
সভায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না, এটা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। মোশতাকরা তো ছিলই, সেদিন আওয়ামী লীগেরও অনেক ষড়যন্ত্রকারী ছিল।
ছাত্রলীগ থেকে আগামীর দেশ গড়ার জন্য সোনার ছেলে উৎপাদন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পদ গড়ার লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে দেশ গড়ার জন্য ছাত্রলীগ তৈরি হতে হবে। যারা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।