অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূরের বিরুদ্ধে এবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন ঢাবির সেই ছাত্রী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন গ্রহণ করে বুধবার বিকালে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার শামীম আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে নুরুল হক নূরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ভিপি নূরসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। পরে নুরুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করেন ওই ছাত্রী।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে। নূর ও মামুন ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক (২) মো. সাইফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি মো. নাজমুল হুদা এবং ঢাবি শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।
মামলা দায়েরের পর ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে নূরকে আটক করে পুলিশ। ধর্ষণের মামলার পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগেও তাকে আটক করা হয়। এর পর তাকে নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা শেষে রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এরপর গত ৮ অক্টোবর নুরুল হক নূর ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশনে বসেন ওই ঢাবি ছাত্রী।
এবার ওই ছাত্রী শুধু নূরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি ফেসবুকে লাইভে আসেন ভিপি নূর। ধর্ষণের মামলা করা ওই ছাত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে লাইভে বিভিন্ন কথা বলেন তিনি। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (১)/ক, ২৯ (১) ও ৩১ (২) ধারায় মামলাটি করেন ওই ছাত্রী।
মামলায় ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন, আসামি নূর একজন আইন অমান্যকারী, বাকপটু ও ধূর্ত ব্যক্তি। তিনি প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মনগড়া, আইনবহির্ভূত, সরকার-রাষ্ট্রবিরোধী অসত্য, অর্থহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্য কোনো কারণ ছাড়াই নিজেকে ভাইরাল করার জন্য প্রকাশ করে থাকেন। ১২ অক্টোবর দুপুর আড়াইটায় তিনি (নূর) নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি আমাকে (ঢাবি ছাত্রী) দুশ্চরিত্রা বলেন, যা একটি মেয়ের জন্য অপমানজনক শব্দ। এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য সমাজে ঘৃণা-শত্রুতা-অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। আমার (ছাত্রী) সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মানহানি করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এগুলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এই মামলায় পরোয়ানা জারি করে ভিপি নূরকে গ্রেফতার করে ন্যায়বিচার চেয়ে আদালতের কাছে বুধবার আবেদন করেন ওই ছাত্রী। শুনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।