অনলাইন ডেস্ক : ২০২০ সালে মাথাপিছু জিডিপির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ ভারতকে পেছনে ফেললো।
এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্মানজনক পারফরম্যান্স, ভারতের অর্থনীতির ধীর প্রবৃদ্ধি ও করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির খাড়া সংকোচনের ফলে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক (ডব্লিউইও) রিপোর্টে বলা হয়, ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ১০.৫ শতাংশ কমে এক হাজার ৮৭৭ ডলার দাঁড়াতে পারে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। করোনাভাইরাস মহামারির রোধে দেশব্যাপী কড়া লকডাউনের কারণে তীব্র অর্থনৈতিক সংকোচনে এই প্রবৃদ্ধি হ্রাস ঘটেছে। অপরদিকে বাংলাদেশে মাথাপিছু জিডিপি ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮৮৮ ডলার।
মাথাপিছু জিডিপি হলো দেশগুলোর সমৃদ্ধি নির্ধারণের একটি বিশ্বব্যাপী পরিমাপ এবং একটি দেশের সমৃদ্ধি বিশ্লেষণে অর্থনীতিবিদরা জিডিপির পাশাপাশি মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধি ব্যবহার করেন। একটি দেশের জিডিপি দেশটির মোট জনসংখ্যার হিসাব দিয়ে ভাগ করে এটি গণনা করা হয়।
এটি লক্ষণীয় যে বাংলাদেশ এবং ভারত উভয়ের চলতি মূল্যে জিডিপির হিসাব করা হয়েছে। ডব্লিউইও’র পরিসংখ্যানে এটি নির্দেশ করে যে, শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ এশিয়ায় মহামারির কারণে ভারত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু জিডিপি ৮ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুলনামূলকভাবে নেপাল এবং ভূটান চলতি বছরে তাদের অর্থনীতি জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে, অন্যদিকে আইএমএফ ২০২০ বা আরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তানের ডেটা প্রকাশ করেনি।
আইএমএফ আগামী বছরে ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আভাস দিয়েছে, এতে ২০২১ সালে মাথাপিছু জিডিপিতে ভারত সামান্য ব্যবধানে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাবে।
ডলারের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ২০২১ সালে ৮.২ শতাংশ বাড়বে, বিপরীতে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ৫.৪ শতাংশ। এতে ভারতে মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে দুই হাজার ৩০ ডলার, বাংলাদেশের হবে এক হাজার ৯৯৯ ডলার।
ইতালি ও স্পেন ব্যতীত যেকোনো বৃহৎ অর্থনীতি এবং প্রধান উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যে ভারতে প্রদর্শিত অর্থনৈতিক ঝাপটা বৃহত্তম।
আইএমএফের রিপোর্টে বলা হয়, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলের অর্থনীতি ৫.৮ শতাংশ, রাশিয়া ৪.১ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ শতাংশ এবং চীনে ১.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।
আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক: এ লং অ্যান্ড ডিফিকাল্ট অ্যাসেন্ট’ রিপোর্টে বলা হয়, অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির মতোই ২০২০ সালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়ে ৩.৮ শতাংশ দাঁড়িয়েছে, ২০২১ সালে এই প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৪.৪ শতাংশ দাঁড়াবে।