অনলাইন ডেস্ক : আসছে ডিসেম্বরেই সম্পূর্ণ ইভিএমে সাতক্ষীরা ও কলারোয়া পৌরসভার ভোট হতে পারে। উল্লেখ্য, এই দুটি পৌর সভার ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচে জানুয়ারিতেই। তার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এবার পৌরসভা নির্বাচন পুরোটাই ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বর মাসে প্রথম ধাপে ২০/২৫টির মতো পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফেব্রুয়ারি মাসে হবে আরেকটি ধাপ। পর্যায়ক্রমে মে মাসের মধ্যে পুরো পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন হবে। সোমবার (২ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এর আগে সিইসির সভাপতিত্বে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে বঙ্গবন্ধুর সময় প্রণীত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর কোনও ধরনের পরিবর্তন না করে আইনটি বাংলায় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যেসব নির্বাচন ডিউ হবে সেগুলো আমরা ডিসেম্বরের শেষদিকে করে ফেলবো। এরকম প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। পৌরসভার নির্বাচন ইভিএমে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন বা সাধারণ পরিষদ নির্বাচন যেগুলো আছে সেগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। পৌরসভা নির্বাচনের পরে যদি ক্যাপাসিটি থাকে তাহলে কিছু নির্বাচন হয়তো ইভিএমে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেসব পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের যেগুলো ডিউ হবে আমরা সেগুলো করবো। এ সময় পৌরসভার ভোট হবে ২০/২৫টির ওপরে। মে মাসের মধ্যে সকল পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। একসঙ্গে নির্বাচনের লোড নেওয়া যাবে না। ধাপে ধাপে করা ভালো।
কয়টি ধাপে পৌরসভার ভোট হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কতগুলো ধাপে হবে সেটা এখনও চূড়ান্ত নয়। তবে আমরা ধারণা করছি পাঁচটি ধাপ লাগবে। ইভিএমের বিষয়টি বিবেচনা করে ধাপে ধাপে করা হবে। জানুয়ারিতে হয়তো আবার নতুন তফসিল করতে হতে পারে বলেও তিনি জানান।
পুরো পৌরসভা কি ইভিএমে ভোট হবে এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার শাহাদাত হোসেন বলেন, সবগুলো না বলে যতদূর সম্ভব বলতে চাচ্ছি। কোনও কারণে দু-চারটা যদি না করতে পারি এগুলো হয়তো ইভিএম হবে না। তবে নীতিগতভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ইভিএমে হবে।
এ বিষয়ে কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আমরা চাচ্ছি পৌরসভা নির্বাচন ইভিএমে করবো। এজন্য আমাদের ইভিএমের ক্যাপাসিটিটা দেখতে হবে। আমরা একসঙ্গে কতগুলোর ভোট করতে পারবো। ডিসেম্বরের পর ফেব্রুয়ারিতে হয়তো আমাদের কিছু নির্বাচন হবে।
আরপিও বাংলায় হচ্ছে:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) আমরা বাংলায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে, আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে ভেটিংয়ের জন্য। বিষয়টা নিয়ে একটু কনফিউশন আছে, এটা প্রথমে চিন্তা ছিল আইন হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ পরিবর্তন করে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০ করার পরিকল্পনা ছিল। ওইভাবে আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলাম। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটা সিদ্ধান্ত আসে—বঙ্গবন্ধুর সময় যেসব আদেশ হয়েছিল তা পরিবর্তন করা যাবে না। সংশোধন করা যাবে, আমরা সেই আলোকে বিষয়টির প্রতি সম্মান রেখে সেভাবে করেছি। এটা সংশোধন হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ আমরা করেছি। ওই আদেশে ইংরেজি থেকে বাংলায় করার বিষয়টি রয়েছে। সেই কাজটি আমরা করছি।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের অংশটি আরপিও থেকে বের করে নতুন আইন করার উদ্যোগের কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অনেক ক্ষেত্রে পলিটিক্যাল পার্টির নমিনেশনের বিষয়টি আছে। এটা আরপিওতে অ্যাডজাস্ট করা যায় না। এসব কারণে কেবল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের অংশটি নিয়ে আমরা প্রস্তাব করেছি আলাদা আইন করবো। আমাদের যুক্তি হলো এটা ২০০৮ সালে করা হয়েছে। জাতির পিতার আদেশের স্পিরিটের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ না। ২০০৯ সালে একটি অধ্যায় এখানে ঢোকানো হয়েছে। এটি আলাদা করা হলে আরপিওর মৌলিকত্বে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে যদি সরকার মনে করে ওটা আলাদা আইন করার দরকার নেই তবে আরপিওর মধ্যেই প্রতিস্থাপন হবে।