ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যে অপরাধ, তা মনে করে না বলে দাবি করেছে সাফাত আহমেদ। তার ভাষ্য, তারা ‘মেয়ে বন্ধুদের’ সঙ্গে প্রায়ই পার্টিতে ‘এমনটা’ করে থাকে। জন্মদিনের পার্টির এই ঘটনা যে এত বড় হতে পারে, তা তার ধারণাতেই ছিল না। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে অকপটে দুই তরুণীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কথাও স্বীকার করে পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে। জিজ্ঞাসাবাদে উপস্থিত থাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এতে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাদের ভাষ্য, ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান হিসেবে সাফাত উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করতো। অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে তার স্বাভাবিক বলেই মনে হতো।
জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান,সাফাত ও সাদমান স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই সকল কিছু স্বীকার করে। তাদের প্রশ্ন করা হয়,তোমরা পালিয়ে ছিলে কেন? জবাবে সাফাত জানায়,পুলিশ তাদের খুঁজছে এমন খবর পেয়ে পালিয়ে যায় তারা। পুলিশ কেন খুঁজছে জানতে চাইলে তারা বলে,এই বিষয়টিই তারা বুঝতে পারছে না।তারা দুই তরুণীর অভিযোগকে ধর্ষণ বলে মনেই করছে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সাফাত ও সাদমানরা এমন পরিবেশে বড় হয়েছে যে, তাদের কাছে ‘ধর্ষণ’ কোনও বড় বিষয় নয়।তাদের অনেক মেয়েবন্ধু রয়েছে এবং তাদের ভাষায় মাঝেমধ্যেই মেয়েবন্ধুদের সঙ্গে তারা ‘আনন্দ-ফূর্তি’ করে।
পুলিশের আরেকজন কর্মকর্তা জানান, সাফাতের জন্মদিন উপলক্ষে তারা সেইরাতে গভীররাত পর্যন্ত মদ্যপান করে বলে জানিয়েছে। দুই তরুণীর সঙ্গে সম্মতিক্রমেই মিলিত হয়েছিল বলে সাফাত ও সাদমানের দাবি। পরবর্তীতে কী কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তা তারা বুঝতে পারছে না। এমনটি হওয়ার কথা ছিল না বলেও জানায় সাফাত ও সাদমান।
দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে সহায়তার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার সদস্য ডিসি- ডিবি (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুই তরুণীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য জানার জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’ রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক কিছু বের হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।