প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সাতক্ষীরায় ‘ছবিসহ ভূয়া আইনজীবী রুহুল আমিনকে জরিমানা’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিমুলবাড়ীয়া গ্রামের মোঃ আব্দুস সাত্তারের ছেলে আইনজীবী রুহুল আমিন। শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রতিবাদ জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি পেশায় একজন আইনজীবী। বার কাউন্সিলের অধীনে অনুষ্ঠিত আইনজীবী তালিকাভূক্তির মৌখিক পরীক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর সদর উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের কম্পিউটার ডাটাএন্ট্রি অপারেটর কাশেমপুর গ্রামের মোঃ আব্দুস সামাদের ছেলে মোঃ কামরুজ্জামান নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতিতে আমার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সমিতির সভাপতি এ্যাডঃ এম.শাহ আলম আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটির কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই ওইদিন আইনজীবী সমিতির ১নং ভবনের বিশ্রামাগারে আমাকে আটক করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তালেব স্যারকে ডেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে পাঁচশত টাকা জরিমানা করান। এসময় আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি। পরের দিন ২০ নভেম্বর আমার ফেসবুকে প্রদত্ত ছবিসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সকল প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ভূয়া আইনজীবী রুহুল আমিনকে জরিমানা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন।
আইনজীবী রুহুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা যাচাই-বাছায় ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে একটি দরখাস্ত করলেও সভাপতি এ্যাডঃ এম. শাহ আলম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। পরে আমি জেলা আইনজীবী সমিতিতে শিক্ষানবীশ আইনজীবীর কার্ড প্রাপ্তির জন্য ধার্যকৃত ফিস জমা দিয়ে লিখিত আবেদন করে সভাপতির কাছে মোবাইলে ক্ষমা চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আপনাকে সনদ দিলেও আপনি সাতক্ষীরা বারের সদস্য পদ পাবেন না। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে হঠাৎ করে “টাউট” নামক একটি নতুন কলাম সংযোজন পূর্বক আমার নাম অন্তর্ভূক্ত করে ২১জনের একটি টাউট তালিকা প্রকাশ করেন। ইতোমধ্যে আমি মোবাইল কোর্টের জরিমানার দায় হতে আদালতের মাধ্যমে অব্যহতি পাই। পরে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতিতে আমাকে সদস্য পদ প্রদানের জন্য সভাপতি বরাবর পুনরায় একটি আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সুফল হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আইনজীবী হওয়ার লক্ষ্যে বিগত ২৭ নভেম্বর ২০০২ সালে উচ্চতর ডিগ্রি “রারিষ্ট্রারশীপ” সম্পন্ন করার লক্ষ্যে লন্ডন এ্যাম্বাসি ও ফেস করি। কিন্তু অর্থাভাবে বিলেত যেয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের স্বপ্নটা পূর্ণ না হওয়ায় মনের কষ্টে ‘ল’ পড়া ছেড়েই দিয়েছিলাম। শেষ এল.এল.বি ডিগ্রী অর্জন করে বাংলাদেশ বার-কাউন্সিলের অধীনে গত ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে একজন আইনজীবী হিসাবে নিবন্ধিত হওয়ার পরও অদ্যাবধি সাতক্ষীরা বারের সদস্য হতে না পেরে বর্তমানে হৃদরোগাক্রান্ত স্ত্রী, দুটি সন্তানও অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মা’কে সঙ্গে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। তিনি তার সঙ্গে ঘটিত এসব অন্যায়, জুলুম, অত্যাচারসহ সকল প্রকার নির্যাতনের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার পাওয়ার প্রত্যাশায় এবং দোষী ও ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাড় করানোর জন্য সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইন মন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান মন্ত্রীর আশু হক্ষক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডঃ এম. শাহ আলম বলেন, রুহুল আমিন টাউট তালিকাভুক্ত। নবজীবন ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক হিসাবে চাকুরি করাকালিন সময়ে তথ্য গোপন করে তিনি বার কাউন্সিলের সদস্যপদ গ্রহণ করে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ট্রাইব্যুনালে মামলা পেনডিং রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি সাতক্ষীরা বারের সদস্য হতে পারবেন না।
পূর্ববর্তী পোস্ট