অনলাইন ডেস্ক : পূর্ব ঘোষিত তিনদফা দাবি না মানায় ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম শেষে পুনরায় মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে এবং মশাল মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়ক থেকে শুরু করে মশার মিছিল। মিছিলটি বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক একাধিকবার প্রদক্ষিণ করে। এ সময় দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন স্লোগান দেয় আন্দোলনকারীরা।
সম্পর্কিত খবর
ফলে সারাদেশের সঙ্গে ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটার সড়ক যোগাযোগ আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে বুধবারও সকাল থেকে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে বন্ধ ছিল মহাসড়কটি।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পুলিশ রহস্যজনক কারণে এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা প্রদান করলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়।
যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন তারা।
আন্দোলনে অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩-১৪ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী রক্তিম হাসান অমিত হাসানসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হামলার ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত একজন হামলাকারীও গ্রেফতার হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে দায়সারা একটি মামলা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে হামলার নেতৃত্বদানকারী তিনজনের নাম বলা হয়েছিল। তবে অজ্ঞাত কারণে তাদের নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়নি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সুপ্রভাত হালদার জানান, ‘হামলাকারীদের গ্রেফতোরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামালাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিমকাজ করছেন। তবে তারা আত্মগোপন করায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আশাকরি দ্রুত হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, মঙ্গলবার গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মানিক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী তেল ব্যবসায়ী মামুন মিয়া।
গত মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল নগরের রূপাতলী বাস টার্মিনালে দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে এবং হামলাকারী বিআরটিসি বাস শ্রমিকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। হামলাকারী বিআরটিসির বাস শ্রমিক রফিককে গ্রেপ্তার এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দুই ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর মঙ্গলবার রাতে আবার শিক্ষার্থীদের ওপর বেপরোয়া হামলা চালায় একদল পরিবহন শ্রমিক। হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বুধবার সারাদিন বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে প্রশাসনের আশ্বাসে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন তারা।