অনলাইন ডেস্ক : সিলেটে ফের মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
রোববার ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে ভূমিকম্পটির মাত্রা কত ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাড়ে ৪ ঘণ্টায় পর পর পাঁচবার মৃদু ভূ-কম্পন হয় সিলেটে। এ ভূ-কম্পনে সিলেটজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সর্বশেষ শনিবার দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে পঞ্চম বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর আগে সকাল ১০টা ৩৭ মিনিটে প্রথম, ১০টা ৫১ মিনিটে দ্বিতীয়, বেলা ১১টা ২৯ মিনিটে তৃতীয় এবং ১১টা ৪০ মিনিটে চতুর্থ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
বাংলাদেশ ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র বলছে, তারা চার দফা ভূ-কম্পন রেকর্ড পেয়েছে। মাত্রা কম থাকায় দু-একটি পর্যবেক্ষণে আসেনি।
তবে এসব ভূ-কম্পনের মধ্যে একটির মাত্রা রিখটার স্কেলে সর্বোচ্চ ৪.১ এবং এর কেন্দ্রস্থল ঢাকা থেকে ১৯২ থেকে ২৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব অর্থাৎ সিলেট অঞ্চলে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেটে ছয় বার ভূমিকম্প অনুভূত হলেও চার বারের ভূমিকম্প ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ দুপুর ১টা ৫৮মিনিটে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪।
এর আগে ১০টা ৫১ মিনিটে দ্বিতীয় ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ১ মাত্রার ছিল। ১০টা ৩৭ মিনিটে যে ভূমিকম্প হয়েছিল সেটা রিখটার স্কেলে ছিল ৩ ও ১১টা ২৯ মিনিটে যেটা হয়েছিল সেটা ২ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ছিল।
তবে রোববার ভোর ৪টা ৩৫ মিনিটে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা জানা যায়নি।
ঢাকায় কেন্দ্রটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, সাধারণত তিনটি সেন্টারে ভূ-কম্পনের ওয়েভ ধরা পড়ার পরই ভূমিকম্প হিসাবে ধরে নেওয়া হয়।
কিন্তু শনিবার সিলেটে যে ভূ-কম্পন হয়েছে তার সবগুলোই সিলেট সেন্টারে ধরা পড়েছে, অন্য কোথাও পড়েনি।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পগুলো ছোট হলেও সিলেটের উপরে ভারতের মেঘালয়ে ডাউকি ফল্ট, সিলেটের পাশের ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেট বাউন্ডারি। এসব কারণে বড় ঝুঁকিতে সিলেট।
তবে এমন ছোট ছোট কম্পন দুটি কারণে হতে পারে, একটি ভূ-কম্পন পরবর্তী ইফেক্ট অথবা পূর্ববর্তী ইফেক্ট হতে পারে। তাই সচেতন থাকতে হবে আগামী ৭২ ঘণ্টা।
একই কথা বলেন, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম।
তিনি বলেন, এত কম সময়ের মধ্যে কয়েকদফা ভূ-কম্পন সহজভাবে নেওয়ার কিছু নেই। তাই পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা নগরবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নেপালে ও মিয়ানমারে বড় ভূমিকম্প হয়েছে। এসব ভূমিকম্পের পরবর্তী ইফেক্ট হতে পারে। তবে ভূমিকম্প নিয়ে আগাম কিছু বলা সম্ভব না। তাই এমন ছোট ভূমিকম্প আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাসও হতে পারে। আগামী এক সপ্তাহ নগরবাসীকে একটু সচেতন থাকার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
এদিকে ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণে সিলেট নগরের পাঠানটুলা দর্জিপাড়া এলাকার দুটি ছয় তলা ভবন হেলে পড়েছে বলে জানা গেছে।