খেলার খবর : প্রথমার্ধে ঠিক গুছিয়ে উঠতে পারছিল না কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল ব্রাজিল। যার ফলে সবশেষ আসরে ফাইনালে হেরে যাওয়া পেরু নিয়েছে কঠিন পরীক্ষা। তবে দ্বিতীয়ার্ধেই স্বরূপে নেইমার, হেসুসরা আর ব্রাজিলও পেল বিশাল ব্যবধানে জয়।
ভেনেজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে যাত্রা শুরু করা দলটি এবার পেরুকে হারাল ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেই হয়েছে তিনটি গোল। বরাবরের মতো আজও মাঠে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স দলের সবচেয়ে বড় তারকা নেইমার জুনিয়রের।
তবে এ ম্যাচে নেইমারের একক আধিপত্য ছিল না। দলের বড় জয়ে গোল চারটি করেছেন অ্যালেক্স সান্দ্রো, নেইমার, এভারটন রিবেইরো ও রিচার্লিসন। এই গোলগুলোর এসিস্টও করেছেন ভিন্ন ভিন্ন তিন খেলোয়াড়। তারা হলেন যথাক্রমে গ্যাব্রিয়েল হেসুস, ফ্রেড ও রিচার্লিসন।
আগের ম্যাচের শুরুর একাদশে ছয়টি পরিবর্তন নিয়ে এ ম্যাচের দল নামান ব্রাজিল কোচ তিতে। এতে শুরুতে খানিক অগোছালো থাকলেও, ক্রমেই নিজেদের সেরা ছন্দে ফিরেছেন ব্রাজিল তারকারা। যা ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে পেরুকে।
রিও ডি জেনেইরোর নিল্টন সান্তোস স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচটি একপ্রকার প্রতিশোধের লড়াইও ছিল পেরুর জন্য। কোপা আমেরিকার গত আসরের ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরেই শিরোপা স্বপ্ন ধুয়েমুছে যায় পেরুর। এবার ফিরতি ম্যাচেও তাদের উড়িয়ে দিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
শুরুতে খুব একটা ভালো না খেললেও, ম্যাচে লিড নিতে বেশি সময় লাগেনি ব্রাজিলের। মাত্র ১২ মিনিটের মাথায়ই দলকে এগিয়ে দেন অ্যালেক্স সান্দ্রো। ডি-বক্সের ডানদিক থেকে গ্যাব্রিয়েল হেসুসের উদ্দেশ্যে ক্রস দিয়েছিলেন এভারটন। সেটি ধরে ছয় গজের বক্সে বাড়িয়ে দেন হেসুস। সহজেই বাকি কাজ সারেন সান্দ্রো।
লিড নিলেও প্রথমার্ধের পারফরম্যান্সে ঠিক ব্রাজিলসুলভ খেলা উপহার দিতে পারেনি স্বাগতিকরা। উল্টো ব্রাজিলের রক্ষণে বেশ কয়েকবার হানা দিয়েছে পেরু, তৈরি করেছে কয়েকটি সুযোগ। কিন্তু এডারসন, থিয়াগো সিলভা, এডের মিলিটাওদের নিয়ে গড়া রক্ষণে চিড় ধরাতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ক্রমেই স্বরূপে ফিরতে শুরু করে ব্রাজিল। ম্যাচের ৫২ মিনিটের সময় অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায় দানিলোর শট আর ৬৩ মিনিটে বাতিল হয় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। ডি-বক্সের মধ্যে নেইমার ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। পরে ভিএআর দেখে বাতিল করেন সেটি।
অবশ্য গোলের জন্য আর পেনাল্টির প্রয়োজন হয়নি নেইমারের। মিনিট পাঁচেক পর ফ্রেডের কাছ থেকে গোলের ২০ গজ দূরে বল পান নেইমার। তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জায়গা বানিয়ে নিচু শটে পেরুর গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের এটি ৬৮তম গোল।
দুই গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফেরার তেমন সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি পেরু। উল্টো শেষদিকে হজম করে আরও দুই গোল। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার ঠিক আগ দিয়ে ফ্রেডের এসিস্টে স্কোরশিটে নাম তোলেন এভারটন রিবেইরো। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে এটিই তার প্রথম গোল।
ভিএআর দেখাসহ ফাউল ও অন্যান্য কাণ্ডে বেশকিছু সময় নষ্ট হওয়ায় অতিরিক্ত ছয় মিনিট দেন রেফারি। এর তৃতীয় মিনিটে হালি পূরণ করে ব্রাজিল। গোলটি হতে পারত রবার্তো ফিরমিনোর। তার জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন পেরুর গোলরক্ষক। তবে ফিরতি বলে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন রিচার্লিসন।
এ জয়ের সুবাদে কোপা আমেরিকায় নিজেদের জয়যাত্রা অব্যাহত রাখল ব্রাজিল। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষস্থান নিজেদের দখলেই রেখেছে তারা। অন্যদিকে পরপর দুই ম্যাচ হেরে টেবিলের তলানিতে অবস্থান পেরুর।