খেলার খবর : দুইদিন বিরতির পর আবার মাঠে গড়িয়েছে ইউরো কাপ। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে হেরে গেছে সুইজারল্যান্ড। সেমির টিকিট নিশ্চিত করেছে স্পেন।
পরের ম্যাচে বেলজিয়ামকে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে মাঠে সেমির টিকিট কাটল ইতালি।
শুক্রবার রাতে জার্মানির মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় রাত ১ টায় শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় ইতালি ও বেলজিয়াম।
যে ম্যাচে ২-১ গোলে ফিফা র্যাংকিংয়ে এক নম্বর দলকে হারিয়েছে ইতালি।
ম্যাচের শুরুর ৪ মিনিটের মাথায় অফসাইডের বাঁশির কারণ হয়ে দাঁড়ান বেলজিয়ামের রোমেলু লুকাকু। বোঝাই যাচ্ছে গোল পেতে কতটুকু মরিয়া তিনি।
১৩ মিনিটের মাথায় ইতালির হয়ে ১০০তম ম্যাচ খেলা বোনুচ্চি বেলজিয়ামের জালে বল জড়িয় দেন।উল্লাসে ফেঁটে পড়ে গ্যালারি। তবে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায়। কারণ ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করেন রেফারি। এবার অফসাইডে চিয়েল্লিনি।
২০ মিনিটের মাথায় টিয়েলম্যানসকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ইতালির ভেরাত্তি। বাঁচেননি টিয়েলম্যানসও। তাকেও হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন রেফারি।
এর দুই মিনিট পর ডি’ব্রুইনের দুর্দান্ত এক শট প্রতিহত করেন ইতালির গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুমা। ২৬ মিনিটের মাথায় লুকাকুর চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেন দোন্নারুমা। এক মিনিট পরও গোলপোস্ট বরাবর শট নেন ইনসিনিয়ে, তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দুর্দান্ত সব আক্রমণের পর ৩১ মিনিটে গিয়ে সফলতা মিলে ইতালির। ভেরাত্তির পাস থেকে গোল করে ইতালিকে লিড এনে দেন বারেল্লা। ডি-বক্সে বল পেয়ে দুই জনের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে জোরালো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন ইন্টার মিলান মিডফিল্ডার। গোল শোধ করবে কি উল্টো প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার মিনিটখানেক আগে আরো একটি গোল হজম করে বেলজিয়াম।
এবার ইনসিনিয়ের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। মাঝমাঠ থেকে বাঁ দিক দিয়ে উঠে একজনকে কাটিয়ে সামনে এগিয়ে প্রায় ২২ গজ দূর থেকে অসাধারণ এক শটে বল জালে পাঠান ইনসিনিয়ে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি থিবো কোর্তোয়া। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মানচিনির দল।
তবে গোলোৎসবের রেশ কাটতে না কাটলে ইতালির রক্ষণের বিপজ্জনক জায়গায় বল নিয়ে ঢুকে পড়েন বেলজিয়ামের ডোকুকে। গোল বাঁচাতে তাকে ফাউল করেন লরেঞ্জো। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
প্রথমার্ধে সংযোজিত সময়ে তথা ৪৭তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান কমান লুকাকু।
২-১ স্কোরলাইনে বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে নেমে দারুণ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে ইতালি। ৫২ মিনিটে ইমমোবিলের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬৬ মিনিটে স্পিনাজ্জোলার শট মাঠের বাইরে চলে যায়। ৬৯ মিনিটে ইনসিনিয়ের শট প্রতিহত করেন বেলজিয়াম গোলরক্ষক।
সমতায় ফিরতে ৬৯ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন বেলজিয়ামের কোচ।
টিয়েলম্যানস ও থমাসকে তুলে নিয়ে মার্টেন্স ও নাসেরকে মাঠে নামানো হয়। ৭৪ মিনিটে আবারও পরিবর্তন বেলজিয়াম দলে। এবার নাসেরকে তুলে নিয়ে ডেনিসকে মাঠে নামায় বেলজিয়াম।
পরিবর্তন আনে ইতালিও। ৭৪ মিনিটে ভেরাত্তি ও ইমমোবিলকে তুলে নিয়ে ব্রিয়ান ও বেলোত্তিকে মাঠে নামায় ইতালি।
৭৯ মিনিটে ক্লান্ত ইনসিনিয়েকে তুলে নিয়ে বেরার্দিকে মাঠে নামায় ইতালি। স্পিনাজ্জোলার পরিবর্তে মাঠে নামেন এমার্সন।
এই পরিবর্তনের খেলায় গোলের দেখা মিলছিল না। ৮৪ মিনিটে ইতালির পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ডোকু। তাতে কাজ হয়নি। পোস্টের বাইরে দিয়ে বল চলে যায়।
৯০ মিনিটের মাথায় ডি’ব্রুইনকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন বেরার্দি। এসব ফাউলের জেরে দ্বিতীয়ার্ধে ৫ মিনিট সময় সংযোজন করেন রেফারি।
৯১তম মিনিটেমিডফিল্ডার সিয়েসাকে সরিয়ে ডিফেন্ডার রাফায়েলকে নামিয়ে রক্ষণ জমাট করে ইতালি। ৯৭ মিনিটে ভার্মায়লেনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
শেষমেষ সমতায় না ফিরতে পারায় রেফারির শেষ বাঁশি উল্লাসে মাতে ইতালি। ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতে সেমির টিকিট নিশ্চিত করে মানচিনির শিষ্যরা।