অর্থনীতির খবর : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন স্থগিত রেখেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ স্থানান্তর (এমএফএস) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ। একই সাথে আরও নয়টি প্রতিষ্ঠানের সাথেও লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে বিকাশ।
নিজ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিকাশ জানায়, গ্রাহক স্বার্থ সুরক্ষায় কয়েকটি মার্চেন্টের জন্য বিকাশ-এর পেমেন্ট গেটওয়ে সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
ওই মার্চেন্টগুলোর মধ্যে ইভ্যালি ছাড়াও রয়েছে আলেশা মার্ট, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদীনের প্রদীপ, কিউকুম, বুম বুম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস।
অবশ্য, ‘রেগুলেটরি নীতিমালা অনুযায়ী পেমেন্ট ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পর পুনরায় বিকাশ পেমেন্ট সেবা চালু করা হবে,’ বলে উল্লেখ করেছে বিকাশ।
গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায় যে, ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭.১৮ কোটি টাকা।
গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ ২১৩.৯৪ কোটি টাকা এবং মার্চেন্টদের নিকট হতে ১৮৯.৮৫ কোটি টাকার মালামাল বাকিতে গ্রহণের পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৩.৮০ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা।
গ্রাহকদের কাছ থেকে ২১৪ কোটি টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়া ও মার্চেন্টদের ১৯০ কোটি টাকা পাওনা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকেও নির্দেশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির প্রকৃত দেনা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় গত মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে। এজন্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দলকে কোম্পানির ডাটাবেজে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ। এরপর গত ৯ জুলাই, ইভ্যালির বিরুদ্ধে ৩৩৮ কোটি টাকা জালিয়াতি বা আত্মসাতের তদন্ত চলমান থাকায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী ও কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
একই কারণে শনিবার এই দম্পতির বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় ঢাকার একটি আদালত।
বিভিন্ন ব্যাংক তাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ইভ্যালির সঙ্গে লেনদেন স্থগিত করার পর গত ১৪ জুলাই কোম্পানিটির গিফট ভাউচার গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নোটিশ জারি করে দেশের কয়েকটি ব্র্যান্ডশপ।
গত ১৫ জুলাই, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে ইভ্যালি ডট কমের সদস্যপদ স্থগিত করার উদ্যোগ নেয় ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।