রাজনীতির খবর : আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্যপদ হারিয়েছেন ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে অননুমোদিত একটি সংগঠনের সভাপতি পদে নাম আসার পর তার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটি। এই উপকমিটিতেই সদস্য ছিলেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক পদে থাকা হেলেনা জাহাঙ্গীর।
জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেকে আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবেও পরিচয় দেন। সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসে।
সেই কারণেই তাকে উপকমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি।
তিনি বলেন, সে (হেলেনা) কোথা থেকে কী করে, তার কোনো ঠিক নেই। যখন আমরা তাকে নিয়েছিলাম, তখন তো এটা জেনেই নিয়েছিলাম যে আমাদের পরিবারের একজন সদস্য। এখন যদি সে নিজে নিজেই নেতা হয়ে যায়, তাহলে আমরা কী করব? বুঝে না বুঝে যা ইচ্ছে তাই করছেন। আর এগুলো আমাদের না জানিয়ে করেছেন। আমি ইতিমধ্যে আমাদের দপ্তরে জানিয়েছি, তাকে অব্যাহতির চিঠি দিয়ে দেওয়ার জন্য। আমাদের উপকমিটিতে যেহেতু সে নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছে, তার সদস্যপদ আমরা বাতিল করে দিয়েছি।
উপকমিটিতে হেলেনার পদ পাওয়ার বিষয়ে চুমকি বলেন, উনি তো কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য। আওয়ামী পরিবারের হিসেবেই আমি জানি। উনার জয়যাত্রা টেলিভিশন নামে একটা মিডিয়া আছে, যেটার সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী মহোদয় আছেন। এই সুবাদেই উপকমিটিতে উনাকে আমরা রেখেছিলাম।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম রুহুল আমিন শনিবার বলেন, আমরা তাকে অব্যাহতি দিয়ে দিয়েছি। গত মাসে ডাকযোগে চিঠি পাঠিয়েছি।
কী কারণে অব্যাহতি দিয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ অনেক আছে, সেটা আমরা বলতে চাই না। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দিয়েছে, আমরা দপ্তর থেকে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি।
‘চাকরিজীবী লীগ’ নামে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তারা দুই-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর শনিবার বিকালে বলেন, আমাকে উপকমিটি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো চিঠি আমি পাইনি। দলীয়ভাবে কেউ কিছু বলেওনি। আর আমি তো কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা।
চাকরিজীবী লীগে সম্পৃক্ততা অস্বীকার না করে তিনি বলেন, আমি চাকরিজীবী লীগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। আমাকে এই কমিটিতে সভাপতি করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাই অনেকেই ফেইসবুকে দিয়েছে। যেহেতু আমাকে সভাপতি বানানোর কথা ছিল, সেই হিসেবে কেউ হয়তবা দিয়েছেন।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এবং জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত এইচ এম এরশাদের পুরনো দুটি ছবিও সম্প্রতি ফেইসবুকে ছড়িয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এক ফেসবুক পোস্টে জবাবও দিয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
তিনি লিখেছেন, খালেদা জিয়া ও অন্যান্যদের সাথে যে ছবিগুলা ভাইরাল হচ্ছে সেটা বিয়েতে এসেছিল তখন তোলা ছবি এবং এই ছবি গুলা আমি নিজেই ফেসবুকে দিয়েছিলাম। আমি একজন প্রকৃত ১০০% ব্যবসায়ী ও সরকারের একজন কমার্শিয়ালি ইমপোর্টেন্ট পার্সন CIP…সেখান থেকে রাজনীতিতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ছোটবেলা থেকেই। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমাদেরকে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে যেতে হয় একটা ছবি মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে না।