অনলাইন ডেস্ক : বগুড়ায় এক বিড়ি ব্যবসায়ীকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ডিবি পুলিশের সাইবার ইউনিটের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সাব-ইন্সপেক্টর শওকত আলমকে সাময়িক বরখাস্ত ও ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিনকে রাজশাহী রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়। রোববার তাদের দু’জনকে রাজশাহীর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে বদলি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দারের নেতৃত্বে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ব্যবসায়ীর লিখিত অভিযোগ ও তদন্ত কমিটি সত্যতা পাওয়ায় দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তবে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এটা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
অভিযোগে জানা গেছে, ডিবি পুলিশের সাইবার ইউনিটের ওই দুই কর্মকর্তা গত ২৭ মে বগুড়া সদরের শিকারপুর গ্রামে মাস্টার বিড়ি ফ্যাক্টরিতে যান। সেখানে বিপুল পরিমাণ জাল ব্যান্ডরোল আছে বলে মালিক হেলালকে ডাকা হয়। গুদামে ব্যান্ডরোল থাকলেও হেলাল সেগুলো বৈধ দাবি করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যান্ডরোলসহ ব্যবসায়ী হেলালকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।
এক পর্যায়ে বলেন, পুলিশ সুপারকে ম্যানেজ করতে পারলে মামলা হবেনা। বিনিময়ে দুই কোটি টাকা দাবি করা হয়। ব্যবসায়ী হেলাল ২৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। তাৎক্ষণিকভাবে ১০ লাখ টাকা ও এক সপ্তাহ পরে অবশিষ্ট ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা হয়। ব্যবসায়ী হেলাল নয় লাখ টাকা সংগ্রহ করে রাতেই পুলিশ কর্মকর্তাদের দেন।
পরবর্তীতে ব্যবসায়ী হেলাল অবশিষ্ট টাকা দিতে তালবাহানা ও অপারগতা প্রকাশ করেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের চাপে বিব্রত ওই ব্যবসায়ী গত ১৩ জুলাই বিষয়টি পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবসায়ীকে তার কার্যালয়ে ডেকে আনেন। বিস্তারিত শোনার পর ব্যবসায়ীর কাছে লিখিত অভিযোগ নেন। এসপি জেনে যাওয়ায় পুলিশ কর্মকর্তারা চাঁদাবাজির ওই নয় লাখ টাকা ফেরত দেন।
পুলিশ সুপার পরদিন এ ঘটনা তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরীকে প্রধান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জীকে সদস্য করে কমিটি গঠন করেন।
কমিটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় শনিবার রাতে অভিযুক্ত সাইবার পুলিশের এসআই শওকত আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে ক্লোজ এবং ইন্সপেক্টর এমরান মাহমুদ তুহিনকে রাজশাহী রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করেন। রোববার দু’জনকে রাজশাহীর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে বদলি করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, ব্যবসায়ীকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় বগুড়া ডিবি পুলিশের সাইবার ইউনিটের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।