দেশের খবর : হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মদ তার নয় বরং তার ছেলের-এমন দাবি করেছেন বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ উপকমিটির সদস্যের কন্যা জেসি আলম।
তার দাবি অহেতুক তার মাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তার বাসা থেকে জব্দ হওয়া হরিণের চামড়াটি উপহার হিসেবে পাওয়া। বিদেশি মুদ্রাগুলোও অবৈধ নয়।
বৃহস্পতিবার রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। চার ঘণ্টা অভিযান শেষে তাকে আটক করা হয়েছে। তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, হরিণের চামড়া, বেশ কিছু ছুরি, বিদেশি মুদ্রা, ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম ইত্যাদি জব্দ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বিদেশি মদ প্রসঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মেয়ে জেসি আলম বলেন, ‘উই আর অ্যালকোহল-ফ্রি ফ্যামেলি। করোনাকালীন আমরা কোনো অ্যালকোহল খাইনি। এই মদগুলোর কালেকশন আমার ভাইয়ার। তার এগুলোর লাইসেন্সও আছে। সেই লাইসেন্সও নিয়ে গেছে তারা।’
হরিণের চামড়া প্রসঙ্গে জেসি আলম বলেন, ‘এটা মায়ের লীগের বন্ধুরা উপহার দিয়েছে। আমার ভাইয়ার বিয়ে ছিল, সেখানে এই উপহার দিয়েছে তারা।’
জব্দকৃত বিদেশি মুদ্রা সম্পর্কে জেসি আলমের কথা, ‘আমরা ফ্রিকোয়েন্টলি দেশের বাইরে যাই। একটা দেশে না, আমরা অনেকগুলো দেশে যাই। আমাদের সবার পাসপোর্টও আছে। তো ফেরত আসার পার টাকা বেঁচে গেলে সেগুলো কী আমরা ফেলে দেবো নাকি?’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা ক্যাসিনো করতে অনেক সরঞ্জাম লাগে যা আমাদের এখানে ছিল না। আমাদের এখানে তাস ছিল যা আমরা ফ্রেন্ডদের সাথে খেলতাম।’
জেসি জানান, কয়েক মাস আগে আমার মায়ের অপারেশন হয়েছে। ঘুমানোর জন্য তাকে নিয়মিত ঔষধ নিতে হয়। এমন অবস্থায় যদি এসব কাহিনী করা হয় তাহলে একজন মানুষের মন-মানসিকতা ঠিক থাকবে না।
তিনি আরও জানান, র্যাবের অভিযান পরিচালনার জন্য কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না। তারা আমাদের সাথে সহযোগিতা করতে পারতো। তা না করে তারা উল্টো আমাদেরকে দমিয়ে রেখেছে।
এছাড়াও অভিযান চলাকালে র্যাবের এক কর্মকর্তা তাদের সাথে বাজে আচরণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে সেই র্যাব কর্মকর্তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
মাঝরাতে অভিযান শেষে এখন হেলেনা জাহাঙ্গীরকে র্যাবের জিম্মায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে আটকের পর র্যাবের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তেমন কিছুই জানানো হয়নি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে ব্রিফ করা হবে বলে জানান উপস্থিত কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি দলের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ গঠনের ঘোষণাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বিব্রত হন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও। পরবর্তীতে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে কান্নাকাটি করতে দেখা যায় তাকে। আওয়ামী লীগের নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বরের রোডের ৫ নম্বর বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব-১ এর একটি দল। তাদের সঙ্গে ছিল গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।