আব্দুল জলিল : সময় ২ টা ৩০ মিনিট। রোজ বৃহস্পতিবার। পেশাগত দাযিত্ব পালন করতে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে। সঙ্গে ছিল অনুজ সাংবাদিক সাগর ও পলাশ। ভোমরা সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন অফিসের সামনে পৌছাতে চোখে পড়ল ৩ জন ট্রাফিক পুলিশ। তারা পাশের দোকানে বসে আছে। ভোমরা বন্দরে ট্রাফিক পুলিশ কেন ? এমন প্রশ্ন করতেই লোকজন বললেন সম্প্রতি বন্দরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সে কারণে পুলিশ সুপার বন্দর যানজট মুক্ত করতে ট্রাফিক পুলিশ দিয়েছে।
কিন্তু সেদিন আমাদের নির্ধারিত বিষয় ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দের বৈঠাকের সংবাদ সংগ্রহ করা। সে কারণে রওনা হলাম ভোমরা স্থল বন্দর ইমিগ্রেশন অফিসে। ইতিমধ্যে সেখানে দুই দেশের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়েছেন। ইমিগ্রেশন অফিসের নুতন ভবনের শুরু হল আলোচনা সভা। এমসয় বাহিরে এসে বন্দরের যান জট সম্পর্কে খোজখবর নিতে থাকলাম।
গাড়িচালক ও শ্রমিকরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে যানজটের কবলে পড়েছে ভোমরা স্থল বন্দর। যানজটের কারনে গাড়ী লোড-আনলোড করতে পারছে না তারা। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। আর চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ট্রাক চালক আর হেলপাররা। অসুস্থ্য রোগীর চিকিৎসার জন্্য নিয়ে যেতে হিমসিম খেতে হচ্ছে স্বজনদের। যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। ট্রাক আটকে থাকায় কাঁচামাল পচে নষ্ট হচ্ছে।
খোজখবর নিয়ে জানাযায়, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভোমরা স্থল বন্দর। প্রথমে রাজস্ব লক্ষ্য মাত্রা ছিল ২ কোটি টাকা। এখন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। প্রতিদিন গড়ে ৫শ পন্যবাহী ট্রাক রন্দরে প্রবেশ করে। ভারতের কোলকাতা থেকে এই বন্দরের দুরুত্ব সব চেয়ে কম। সে কারণে ব্যবসায়ীরা এই বন্দর ব্যবহার করছে।
ইতিমধ্যে দুই দেশের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ নির্ধারিত বৈঠাক শেষ হয়েছে। বৈঠাক শেষ দুই দেশের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ জানালেন ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় গেট পাশের নামে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। আর ভারতীয় ট্রাকচালকরা বাংলাদেশের শ্রমিকদের হাতে লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে দুই দেশের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানান তারা।
এবার ফিরে আসতে হবে। ঠিক সে সময় এদেশের সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ বললেন এ্যাসোসিয়েশন অফিস পর্য়ন্ত হেঁটে যেতে হবে। কিন্তু তাদের কথা না শুনে গাড়িতে উঠলাম। তবে যানজটে কারণে গাড়ি আর সামনে যায় না। দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে থাকতে হল। লোকজন বলছে এই রাস্থায় যেতে পারবেন না। সারারাত বসে থাকতে হবে। অবশেষে একজন বষস্ক শ্রমিক এসে ভারতীয় ট্রাক চালকের সাথে রীতিমত খারাপ আচারণ করে সরিয়ে দিয়ে আমাদের গাড়িটি লক্ষিদাড়ি গ্রামে রাস্থায় ঢুকিয়ে দিলেন। দীর্ঘপথ ঘুরে ফিরতে হল সাতক্ষীরা শহরে। তবে এর আগে যানজট নিয়ে কথা হয়েছিল ভোমরা সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট সমিতি ও স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে।
সিএ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, বন্দরে এখন কোন যানজট নেই। যদি কেউ বলে থাকে সেটা সঠিক না।
ট্রান্সপোর্ট সমিতির সভাপতি কামরুল ইসলাম জানান, একটি প্রভারশালী কুচক্র মহল অনৈতিক সুবিধা নিতে রন্দরে যানজট সৃষ্টি করছে। তাদের অবৈধ ব্যবসা আছে। যানজট থাকলে অবৈধ পন্য নিয়ে যেতে সুবিধা হয়। ফলে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।