স্বাস্থ্য ডেস্ক : মানবদেহের জন্য অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করতে সহায়তা করে এই অঙ্গটি। কিডনি মানুষের শরীরের লবণ এবং খনিজের ভারসাম্যতা বজায় রাখে। শরীর থেকে অ্যাসিড অপসারণ করে। শরীরকে সুস্থ রাখতেও অত্যন্ত সহায়ক। তাই কিডনির যথাযথ যত্ন নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
যে ৮ অভ্যাস কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতি :
আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই এখন থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করুন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, দৈনন্দিন কোন কোন অভ্যাস কিডনির ক্ষতি হওয়ার মূল কারণ।
১) ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার বাজারে ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস খুব সহজেই কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো হলো ব্যথানাশক ওষুধ। তবে এই ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার কিডনির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে যাদের ইতিমধ্যেই কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২) উচ্চ লবণযুক্ত খাবার রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। ফলে, কিডনির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। তাই খাবারের স্বাদ বাড়াতে, কেবল লবণ ব্যবহারের পরিবর্তে, বিভিন্ন ভেষজ এবং মশলার ব্যবহার করুন।
৩) প্রক্রিয়াজাত খাবারে সোডিয়াম এবং ফসফরাসের মাত্রা বেশি থাকে। তাই কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের, প্যাকেজড খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। উচ্চ ফসফরাসযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারের সেবন, কিডনি এবং হাড়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৪) সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান, শরীর থেকে সোডিয়াম এবং টক্সিন বের করে দিতে সহায়তা করে। তাছাড়া এটি কিডনি স্টোন হওয়ার ঝুঁকিও হ্রাস করে। যারা ইতিমধ্যেই কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত, তাদের কম তরল পান করা প্রয়োজন। তবে সুস্থ কিডনিযুক্ত ব্যক্তিদের, প্রতিদিন ৩-৪ লিটার জল পান করা উচিত।
৫) রাতের ভালো ঘুম, শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিডনির কার্যকারিতা অনেকটাই রাতের ঘুমের ওপর নিয়ন্ত্রিত হয়।
৬) খুব বেশি মাংস খেলে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রোটিনের প্রয়োজন হয়, এটা আমরা সবাই জানি। আর এই প্রোটিনের ভালো উৎস হল মাংস। তবে অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন থেকে রক্তে উচ্চমাত্রায় অ্যাসিড উৎপন্ন হতে পারে, যা কিডনির ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর, এটি অ্যাসিডোসিসের কারণ পর্যন্ত হতে পারে। অ্যাসিডোসিস এমন একটি অবস্থা যেখানে কিডনি দ্রুত অ্যাসিড নির্মূল করতে পারে না।
৭) ধূমপান কেবল ফুসফুস এবং হৃদয়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকারক নয়, এটি কিডনির ক্ষেত্রেও অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা ধূমপান করেন তাদের প্রস্রাবে প্রোটিন থাকার সম্ভাবনা বেশি, যা কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অন্যতম লক্ষণ।
৮) অতিরিক্ত মাত্রায় মদ্যপান করা নিয়মিত উচ্চমাত্রায় মদ্যপান কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ মাত্রায় বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ঝুঁকিও দ্বিগুণ হতে দেখা যায়।