নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে এবার ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থি কার্যক্রম পরিচালনা, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌরসভার ১১ কাউন্সিলর। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কাউন্সিলদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন,
প্যানেল মেয়র ও ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৩ জানুয়ারী মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির নানা অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় বরাবর লিখিত আবেদন করি। যা বর্তমানে তদন্তাধীন।
এরই মধ্যে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে তিনি নিজেকে সাধু এবং সকল কাউন্সিলরবৃন্দকে অসাধু ব্যাখ্যা দিয়ে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক কথা বলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। যা খুবই দুঃখজনক। আমরা উক্ত মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পৌর মেয়র ৭৬ লাখ ৫৬ হাজার ৯২০ টাকার পানির বিল মওকুফ করেছেন। যা পৌর আইন লঙ্ঘন করেছেন। অথচ পানি সরবরাহ শাখার সাড়ে ৫ কোটি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।
তিনি বাজার ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহন করেছেন। সম্পূর্ণ বিধি নিষেধ পরিপন্থীভাবে তিনি হাট বাজার বজিারা গ্রহীতা গ্রহনের নিকট প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭১ টাকা বকেয়া রেখেছেন। তিনি অবৈধ সিন্ডিকেট করে তা দলীয় পছন্দ লোকের নিকট হাট বাজার ইজারা প্রদান করেছেন। এছাড়া বিগত তিন বছরের ময়লার ও সেপটি ট্যাংক পরিষ্কারের সমুদয় অর্থ আতœসাৎ করেছেন। এ খাতে তিনি ১৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আতœসাৎ করেছেন। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩ হাজার ২২১ টাকার পৌরকর ও ১০ লাখ ২ হাজার ৬৯৬ টাকার লাইসেন্স ফি মওকুফ করেছেন।
এছাড়া তিনি ভুয়া ভ্রমন ও আপ্যায়ন বিল দেখিয়ে ৩২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা অঅতœসাৎ করেছেন। তিনি প্রতারনার মাধ্যমে বাজেট ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপির ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ৯টি স্কিমে টেন্ডার প্রদান করেছেন। এছাড়া তিনি বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৮ টাকার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকার, ২০২০-২১অর্থবছরে ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৩ টাকা ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪ লাখ ২২ হাজার ৭২৭ টাকার ভুয়া ভাউচার দিয়ে মালামাল ক্রয় করে তা আতœসাৎ করেছেন। তিনি গত ৬ বছর পৌরফান্ড থেকে কোন কারন ছাড়া তার দলীয় লোকজনের ১ কোটি ৮ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৮ টাকার আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছেন। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পৌরসভার কোন ঠিকাদারী কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ না থাকলেও তিনি পৌরসভা থেকে নিজনামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ঠিকাদারী লাইসেন্স গ্রহন করেছেন এবং তিনি সরাসরি জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রতিষ্ঠানিকান প্রকল্পে অংশ গ্রহন করেছেন তার লাইসেন্সে।
এছাড়া পৌরসভার মাষ্টাররোলের কর্মচারী দিয়ে তিনি হোটেল, ঠিকাদারী ও পরিবহন ব্যবসায় বাজে লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার বহু আগে ১৯৭৬ সালে মিনি মার্কেট হওয়ার পর তার বাড়ির পিছনে তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যানের কাছ থেকে দুটি দোকান বরাদ্দ নেন এবং ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিমেল কাউন্সিলর হওয়ার আগে আনুমানিক ১৫/১৬ বছর আগে তার বাবা মা মিনি মার্কেটে পৌরসভা থেকে দোকান ঘর বরাদ্দ নিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। অথচ পৌর মেয়র তাদের নিয়ে যে মিথ্যাচার করেছে তা হাস্যকর। তিনি আরো বলেন, পৌর মেয়র ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা ও ব্যক্তিগত গাড়ি বাবদ পৌরসভা থেকে ৬ হাজার ৬৩৯ লিটার অকটেন বাবদ ৩ লাখ ২৮ হাজার আতœসাৎ করেছেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে এ সময় তারা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির এ সব দূর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন। ##