দেশের খবর: রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার সরানোর ক্রেনটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। সেটির ফিটনেস সার্টিফিকেটও ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। ক্রেনটির সক্ষমতা ছিল ৪৫-৫০ টন। অথচ গার্ডারটির ওজন ছিল ৬০-৭০ টন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে ১৯৯৬-৯৭ সালে ক্রেনটি কেনা হয়েছিল। ত্রুটিপূর্ণ ক্রেনটি কাউন্টার লোড ছাড়াই গার্ডার স্থাপনের কাজ চালানো হচ্ছিল। সর্বশেষ ২০২১ সালে এটার ফিটনেস যাচাই করা হয়, এরপর ক্রেনটির আর ফিটনেস যাচাই করা হয়নি।
খন্দকার আল মঈন বলেন, এ ধরনের গার্ডার স্থানান্তর করতে কাউন্টার লোড ব্যবহার করা উচিৎ ছিল। আরেকটি ক্রেন পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই রাখা উচিৎ ছিল। এমনকি যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা উচিৎ তার ছিল না সেখানে।
তিনি বলেন, র্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর তারা স্বীকার করেন দুর্ঘটনার সময় ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী রাকিব হোসেন (২৩)। এ সময় তাকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন চালক আল আমিন। ক্রেনটির মূল চালক আল আমিনের লাইসেন্স ছিল হালকা যান চালানোর, ভারী যানের নয়।
গত সোমবার উত্তরার জসীমউদদীনে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে বিআরটি প্রকল্পের কাজের সময় ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে ৫ জনের নিহতের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুজন আহত হন। চিকিৎসা দেওয়া হলে তারা সুস্থ হয়ে ওঠেন। নিহতরা হলেন রুবেল (৫০), ঝরনা (২৮), জান্নাত (৬), জাকারিয়া (২) ও হৃদয়। আহত হন রিয়া ও তার স্বামী হৃদয়।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিন তিনি আরও জানান, ক্রেন দিয়ে একটি গার্ডার উপরে তোলার সময় নিচে প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে যায়।
এ ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী ঘটনাস্থলে পরিদর্শন শেষে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতারকে প্রধান করে এই কমিটি গঠিত হয়। কমিটিকে যতদ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।