খেলার খবর: ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন মুমিনুল হক। দিনের তৃতীয় সেশনে প্রথম ইনিংসে নেমে বিনা উইকেটে ১৯ রান করে ভারত। দিন শেষে উইকেটে ছিলেন লোকেশ রাহুল (৩) ও শুভমান গিল (১৪)। দিন শেষে বাংলাদেশ থেকে ২০৮ রানে পিছিয়ে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করবে লোকেশ রাহুলের দল।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই ছিলো বাংলাদেশের। দুই ওপেনার জাকির হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে বাংলাদেশ দল ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়ে চলছিলো।
কিন্তু ১৫তম ওভারে এসেই ছন্দপতন ঘটলো। কুলদীপ যাদবের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া জয়দেব উনাদকাটের বলে ক্যাচ তুলে দেন জাকির হাসান। তার ক্যাচটি তালুবন্দী করেন লোকেশ রাহুল। আউট হওয়ার আগে জাকির করেছিলেন ১৫ রান। এর আগে দ্বিতীয় ওভারেই ক্যাচ তুলেছিলেন জাকির। মোহাম্মদ সিরাজ সেই ক্যাচ মিস করেন।
পরের ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও এই আউটটি ছিলো বিতর্কিত। বাইরে চলে যাওয়া বল প্যাড দিয়ে ঠেকান শান্ত। বলটা ছিলো স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে। তবুও জোরালো আবেদন করেন অশ্বিন। তার জোরালো আবেদনের মুখে আঙ্গুল তুলে দেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা।
রিভিউ নেয়ার পর দেখা যায় বলটি অফস্ট্যাম্প হয়তো আলতো টাচ করে যেতো। কিংবা স্ট্যাম্প মিসও করতে পারতো। তবুও ফিল্ড আম্পায়ার আউট দেয়ার কারনে টিভি আম্পায়ারও সেটিকে আউটই ঘোষণা করেন। ২৪ রান করে ফিরে যান শান্ত। ভালো কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসানও। কিন্তু উমেশ যাদবের বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ধরা পড়েন চেতেশ্বর পুজারার হাতে। ৩৯ বল খেলে ১৬ রান করেন তিনি।
সাকিব আউট হওয়ার পর মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মুশফিকুর রহিম। এই জুটিটা আশা জাগাচ্ছিলো। দু’জনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৪৮ রানের জুটিও গড়ে ওঠে। কিন্তু ভালো খেলতে খেলতেই হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেলার অভ্যাসটা বের পুরোনো বাংলাদেশের ব্যাটারদের। মুশফিকুর রহিমের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারও খেই হারালেন।
জয়দেব উনাদকাটের বলটি ছিলো অফস্ট্যাম্পের ওপর। বলটি বুঝতে না পেরে ব্যাট ছুঁইয়ে দেন মুশফিক। সহজেই সেটি জমা পড়ে উইকেটরক্ষক রিশাভ পান্তের গ্লাভসে। ৩৯ বলে ১৬ রানের একটি ছোট্ট ইনিংস খেলে বিদায় নেন বাংলাদেশের মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিক। ১৩০ রানে পড়ে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেট।
এরপর লিটন দাসকে নিয়ে ৪২ রানের একটি জুটি গড়েন মুমিনুল। লিটন ২৫ করে সহজ ক্যাচ হন অশ্বিনকে ফ্লিক করতে গিয়ে। মেহেদি হাসান মিরাজ উইকেটে টিকতে চেয়েছিলেন। তবে ৫১ বল খেলে ১৫ রানে তাকে ফিরতে হয় উমেশের শিকার হয়ে, উইকেটরক্ষকে ক্যাচ দিয়ে।
৬ রান করে নুরুল হাসান সোহান এলবিডব্লিউ হন উমেশ যাদবের বলে। তাসকিন আহমেদের উইকেটটিও নেন ডানহাতি এই পেসার। একটা প্রান্ত ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়া মুমিনুল হক সেঞ্চুরির সুযোগ মিস করেন।
সাবেক টেস্ট অধিনায়কের আউটটা যদিও ছিলো ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক। অশ্বিনের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল তার গ্লাভসে লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক পান্তর হাতে। ১৫৭ বলে ১২ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ৮৪ রান করেন মুমিনুল।
২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার উমেশ যাদব। ৭১ রানে ৪ উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এক যুগ পর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা জয়েদব উনাদকাট ২ উইকেট নেন ৫০ রানে।
দিনের শেষ দিকে ব্যাট করতে নামে ভারত। দেখেশুনে খেলতে থাকে ভারতের দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও শিবমন গিল। গিল একবার আউট হলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৮ ওভারের বিনা উইকেটে ১৯ রান তুলে দিন শেষ করে ভারত।