নিজস্ব প্রতিনিধি: কালীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর দেয়া সার্বজনীন কালী মন্দিরের উন্নয়নের নামে ডিসি অফিস থেকে ১০ দিনের পারমিশন নিয়ে মেলার নামে বাপ বেটার নেতৃত্বে রাত ভোর চলছে অশ্লীল নৃত্য আর অবৈধ জুয়ার আসর। তবে মন্দিরের উন্নয়ন হোক বা নাই হোক যাত্রাপালা ও পুতুল নাচের নামে চলছে জীবন্ত মেয়েদের উলঙ্গ নৃত্য। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার বহিরাগত জুয়াড়ীর আনা গোনা চলছে এই মেলায়। ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে সেচ মেশিন চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। জানা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে পিরোজপুর মতির ইটের ভাটার পিছনে দেয়া মন্দিরের উন্নয়নের কথা বলে ১০ দিনের অনুমতি নেওয়া হয় ডিসি অফিস থেকে। সেখানে গত শুক্রবার রাত থেকে একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধ জুয়ার আসর বসিয়েছে। সাথে রয়েছে অশ্লীল নৃত্যের সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছেন পিরোজপুর গ্রামের আকবর আলি ও অশ্লীল নৃত্য পরিচালনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছেলে শহিদুল ইসলাম ও নাসির। সাথে রয়েছেন এলাকার চিহ্নিত জুয়ারী ও মাদক ব্যবসায়ীসহ শোভনালী, কালীগঞ্জ ও সাতক্ষীরার কয়েকজন সাংবাদিক। স্থানীয়রা জানান, মেলার মাঠে তেমন কোন দোকান পাট নেই। মাঠের দু’ধারে দুটি যাদু প্রদর্শনী, একটি যাত্রা মঞ্চ থাকলেও সেখানে অল্প কিছুক্ষণ যাত্রা চলে। রাত একটু বেশি হলে তার পর শুধুই চলে অশ্লীল নৃত্য আর পেছনের বাগানে চলছে কয়েক প্রকারের জুয়ার বোর্ড। জুয়ার আসরে টাকা খুইয়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন জুয়াড়ীরা। ফলে এলাকায় চুরি ছিনতাই বেড়ছে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর। কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সজল মুখার্জি তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, শহিদ সামাদ স্মৃতি মাঠ থেকে বিজয় মেলার নাম করে লটারির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেল। আবার পিরোজপুর মতির ভাটার পাশে অশ্লীল নৃত্য ও জমজমাট জুয়ার আসর চলছে। এলাকায় প্রচুর চুরি বেড়েছে। বিশেষ করে মটর এবং শ্যালো মেশিন বেশি চুরি হচ্ছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। জুয়ার বোর্ড পরিচালনাকারী শহিদুল ইসলাম জানান, ডিসি অফিস থেকে ১০ দিনের পারমিশন পেয়েছি। এছাড়া সকলকে ম্যানেজ করে আমাদের এখানে আমরা মেলা বসিয়েছি। আমাদের সাথে বাড়াবাড়ি করে কোন লাভ হবে না। কারণ সব দপ্তরে আমাদের টাকা পাঠানো লাগে। জুয়ার বোর্ড এবং পরিচালনা কমিটিতে থাকা অন্য শোভনালীর এক সাংবাদিক জানান, মেলার পারমিশন নিতে ৫ লক্ষ টাকা ও অন্যান্য দিক ম্যানেজ করতে আরও ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এসে দেখলে বুঝতে পারবেন কি হচ্ছে এখানে। কালিগঞ্জ পিরোজপুরের দেয়া সার্বজনীন কালী মন্দিরের সভাপতি পুলক কুমার হালদার, পিরোজপুরের শহিদুল ইসলাম, প্রবাসপুরের ওলি ও বাবু এসে একটি কাগজে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর করে নেয়। পরে দেখি সেই কাগজে মন্দিরের উন্নয়ন প্রকল্পের নাম করে ডিসি অফিস মারফতে ১০ দিনের যাত্রা গানের অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু তারা সেখানে কি করছে সেটা আমার জানা নাই। আমি বর্তমান নলতা তে থাকি। কালিগঞ্জ থানার ওসি জানান, কালীগঞ্জের পিরোজপুর সামাজিক যাত্রাপালা হচ্ছে। তবে যাত্রার নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর বসার কোন তথ্য নেই তার কাছে। একটি নম্বর থেকে তাকেও ফোন করে জানানো হয়েছিলো। পুলিশ পাঠিয়ে ছিলাম কোন সত্যতা মেলেনি।
আপনার কাছ থেকে শুনলাম। নির্দিষ্ট ছবি থাকলে আমাদেরকে দিতে পারেন। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা জানান, পিরোজপুরে মন্দিরের উন্নয়নকল্পের নামে অশ্লীল নৃত্য, জুয়ার আসরের কথা আজ সকালে ফোনের মাধ্যমে শুনেছি। আজ রাতে লোক পাঠিয়ে তদন্ত করব। সত্য প্রমাণ হলে বন্ধ করে দেয়া হবে। যাত্রার নামে একের পর এক অশ্লীনতা ও জুয়ার আসর বন্ধের দাবিতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।