নিজস্ব প্রতিনিধি :
কলারোয়ার চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও সরকারি অর্থ তছরুপের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইউপি মেম্বর হুমায়ূন কবির। এসময় উপস্থিত ছিলেন, চন্দনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গাজী রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামসহ মোট পাঁচজন ইউপি সদস্য।
সোমবার কলারোয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন,বর্তমান চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা। মাত্র তার বাবার নামে ১০ টাকা কেজি দরের চাউল কার্ড আছে। তার পিতা আব্দুল হামিদ, কার্ড নং-৮৬৯, মোঃ আব্দুল রফিক গাজী, কার্ড নং-৯০৫, আরেক ভাই মোঃ মাসুদ রানা, কার্ড নং-৮৩০ এমনকি তার মায়ের নামেও ২ বৎসরের ভিজিডি কার্ডও ছিলো। চেয়ারম্যান হওয়ার মাত্র ৬ মাসের মধ্যে ১টি ৩ তলা বাড়ী, ১টি ২য় তলা বাড়ী, বাড়ীর সীমানা প্রাচীর, ১টি ১তলা বিশিষ্ট রান্নাঘর ও গোয়াল ঘর এবং আর একটি বাড়ী উত্তর পাশে^র্র গভীর পুকুরের মধ্য হইতে কলম পিলার দ্বারা বাড়ী নির্মাণ কাজ চলমান। যার আনুমানিক ব্যয় ২কোটি টাকা। ইউপি সদস্যদের সহি জাল করে ইউপি সচিব, চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মোছাঃ গফুরোন নেছা(৭,৮,৯), প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মোঃ আবু জাফর ০৮ নং ওয়ার্ডদের সমন্বয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের সরকারি অর্থের তছরুপ করে চেয়ারম্যান।
হিজলদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্বঘোষিত সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম কে চেয়ারম্যান সভাপতি বানিয়ে ৩ জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে জন প্রতি ১০ লক্ষ টাকা সর্বমোট ৩০ লক্ষ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান ও প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর নিকট হতে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে নামহস্তে নিয়োগ বোর্ড দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করেছে। চন্দনপুর দাখিল মাদ্রাসার চেয়ারম্যান ও সুপার মাসুম বিল্লাহ যোগসাজসে সভাপতি বানিয়ে ২টি ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চেয়ারম্যান চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি গয়ড়া জিআর দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি,গয়ড়া বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি, চন্দনপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি, রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক ও মাদরাসা নিয়োগ আছে সেখানেই তিনি ক্ষমতাবলে সভাপতি হচ্ছেন।
কাবিখা, কাবিটা, খাবিখা, টিআর,এডিবি রাজস্ব উদ্বৃত্ত এমপির বিশেষ বরাদ্দ উপজেলা পরিষদের বিশেষ বরাদ্দের দুর্নীতি অনিয়ম ও সরকারী অর্থ তছরুপ করেছে চেয়ারম্যান। গয়ড়া কলেজ মোড় হতে হিজলদী বাজার অভিমুখে রাস্তার দুইধারের আমগাছের দুই মৌসুমে আনুমানিক ১০ লক্ষ টাকা আম গাছের ফল বিক্রয়ের টাকা চেয়ারম্যান একক ভাবে আত্মসাৎ করিয়াছে দুর্নীতির মাধ্যমে। অথচ দুই মৌসুমের আমগাছের আম বিক্রির ১০ লক্ষ টাকা চন্দনপুর ইউনিয়নের অসহায় গরীব দুঃখী মানুষের সেবা করার জন্য একটি এ্যাম্বুলেন্স ক্রয় করার কথা বলেছিলো চেয়ারম্যান। সেই এ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের নামে দুর্নীতির মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা একক আত্মসাৎ করেন তিনি। আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর দুই অর্থ বছরের ট্যাক্সের টাকা যা গ্রাম পুলিশ দ্বারা ওয়ার্ড পর্যায়ের আদায়কৃত আনুমানিক ১১ লক্ষ টাকা চেয়ারম্যান সাহেব এককভাবে আত্মসাৎ করেছে। মাতৃত্বকালিন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, জেলে ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতার বরাদ্দ আমাদেরকে না জানিয়ে রেজুলেশনে জ¦াল স্বাক্ষর করে ইউপি সচিব এবং চেয়ারম্যান ইচ্ছামত স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রকল্প অনুমোদন করিয়াছে। ইউনিয়ন পরিষদের দুই অর্থ বছরের ট্রেড লাইসেন্স এর টাকা আনুমানিক ৫ লক্ষাধিক টাকা চেয়ারম্যান সাহেব এককভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। (২০২২-২০২৩) অর্থ বছরে ভিজিডি কার্ডের যথেষ্ট পরিমানে অনিয়ম আছে, অনেক কার্ডধারী ব্যক্তির নাম থাকলেও অন্যরা মাল উত্তোলন করে নিচ্ছে চেয়ারম্যান এর স্বজন প্রীতির কারণে। এলজিএসপি প্রকল্পের আমরা ইউপি সদস্যরা সভাপতি হইলেও আমরা কাজ করতে পারি না জবাবদিহিতা করতে পারি না বরাদ্দকৃত টাকার পরিমাণও জানতে পারি না। ১২ ইউপি সদস্যের নিকট হইতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা এককালিন গ্রহণ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানের পরে চেয়ারম্যান সাহেব প্রকল্প দিবে বলে ২য় দফায় আবারও ৭ হাজার টাকা গ্রহণ করে মোট ৮৪ হাজার টাকা গ্রহণ করে। এসব অনিয়ম এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন ক্ষমতাধর হওয়ায় কোন দরখাস্তের তদন্ত না করতে দিয়ে তদন্তের মোড় অন্য দিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। আমরা সকলেই আশংখায় আছি। যে কোন সময় চেয়ারম্যান তাদের ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে সে কারনে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।