প্রেস বিজ্ঞপ্তি: দীর্ঘদিন যাবত আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের চেউটিয়া নদীতে বাঁধ দেয়া ও সুইজগেট নির্মান না করার ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে আবাদি জমির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। এতে আশপাশের প্রায় ১০ হাজার বিঘা কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, নদীটি উন্মুক্ত করে বিলের পানি সরে যেতে দিলেই জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।
এই দাবিতে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নে চেউটিয়া নদীর পাড়ে মানববন্ধন করেছে অত্র এলাকার সাধারন জনগন। বৃহস্পতিবার সকালে খাজরা ইউনিয়নের ফটিকখালিতে চেউটিয়া নদীর পাড়ে স্থানীয় শিবপদ মন্ডলের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধন করা হয়।
এতে স্থানীয় কিংকর মন্ডল, হিরন্ময় মন্ডল, মনিন্দ্রনাথ মন্ডল সহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে তারা বলেন, আশাশুনির খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার বিঘা আবাদি জমি রয়েছে। প্রতিবছর সেখানে বিপুল পরিমান ধান উৎপাদন হতো যা দিয়ে জেলার খাদ্যশস্যের চাহিদা মিটতো। কিন্তু কয়েক বছর যাবত পার্শ্ববর্তী চেউটিয়া নদীটি মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়ার পর থেকে বিলের পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। কারন মাছ চাষীরা খালের ওপর বাঁধ দিয়ে ও নেটপাটা লাগিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথটি বন্ধ করে দিয়েছেন। এই কারনে নদীটি পলি জমে ভরাট হয়ে পানিধারন ক্ষমতা হারিয়েছে। এছাড়া কেউ কেউ ঘের তৈরী করায় নোনা পানিও বিলে প্রবেশ করছে।
এসব কারনে ওই এলাকার চাষীরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের প্রধান জীবিকা চাষাবাদ বাদ দিয়ে এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে যাচ্ছেন। অনেকে দিনমজুর হিসাবে কাজ করছেন। এর ফলে তারা অসহায় হয়ে পড়েছে, অর্ধাহারে ও অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। ফসল না হওয়ায় বিশাল এই বিলে গরু ও ছাগল চরাচ্ছেন অনেক কৃষক।
বক্তারা আরও বলেন, খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের সীমানায় অবস্থিত কালকি নামক সুইসগেটটি খুলে দেওয়া হলে বিলের পানি নিষ্কাশনের পথ সহজ হবে। এছাড়া ইজারা বাতিল করে চেউটিয়া নদীকে খোলপেটুয়া নদীর সাথে সংযোগ করিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। প্রায় ১০ হাজার বিঘার বিশাল এই বিলটিতে যদি ফসল ফলানো না যায় তাহলে কৃষকরা জমি বিক্রি করে দিতে পারে আর এতে লাভবান হবে স্থানীয় ভুমিদস্যূরা।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, খাজরা ইউ পি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম, হাবিবুর রহমান, গণেশ চন্দ্র বৈদ্য, প্রদীপ চক্রবর্তী, অরুন মন্ডল, নৃপেন্দ্র মন্ডল সহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। এদিকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব কাজী আরিফুল রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি আলম নুর জলবদ্ধতা এলাকা পরিদর্শন করেছেন।