অনলাইন ডেস্ক :
কোন জটিলতা ছাড়াই কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে পর এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন তাবলিগ জামাতের সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা।
আগামী ৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবেন তারা। সাদপন্থী কাকরাইল মারকাজ মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মদ আজিমুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেন জুবায়ের অনুসারীরা। সেদিন তারা ঘোষণা দেন, টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠ ও ঢাকার কাকরাইল মসজিদে দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারীদের আর ঢুকতে দেওয়া হবে না।
এই উত্তেজনার মধ্যে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে ঢোকেন সাদপন্থিরা। সকাল ৮টার পর সাদপন্থীদের একটি বিশাল দল মসজিদে প্রবেশ করে। দুপুরে মসজিদের সামনের ও আশপাশের সড়কে তাদের বিপুল উপস্থিতি দেখা যায়। সেখানে বড় জামাতে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।
জুমার জামাত প্রধান সড়ক পার হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ছাড়িয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত পৌঁছে যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদের পাশে, রমনা ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাবলিগ জামাতের দুই শীর্ষ নেতা দিল্লির মাওলানা সাদ ও বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়েরের পন্থীদের মধ্যে সম্প্রতি নতুন করে উত্তেজনা দেখা্ দেয়। গত কয়েক দিন ধরে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দখলকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষই পালটাপালটি বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে জুবায়ের অনুসারীরা ঘোষণা দেন, দেশে ইজতেমা দুবার নয় একবারই হবে। টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠ ও ঢাকার কাকরাইল মসজিদে দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারীদের আর ঢুকতে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে ৯ নভেম্বর এক ভিডিও বার্তায় সাদপন্থী ইমাম মুফতি আজিমুদ্দিন আজ শুক্রবার কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের কাকরাইল মসজিদে না আসার আহ্বান জানান। এরপর গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থীরা বলেন, মাওলানা সাদের অনুসারীদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না
এ অবস্থায় সাদপন্থীরা শুক্রবার সকালে কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করতে গিয়ে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা মোকাবিলায় সেখানে ভোর থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা কাকরাইল মসজিদে তাদের নির্ধারিত অবস্থানের সময় শেষে শুক্রবার সকালে মসজিদ থেকে সরে যান। সকাল ৮টার পরে প্রবেশ করেন সাদপন্থীরা। নিয়ম হলো এই মসজিদে ১৪ দিন থাকবেন সাদপন্থীরা এবং ২৮ দিন থাকবেন জুবায়েরপন্থীরা।
পুলিশ জানায়, এখন দুই সপ্তাহ অবস্থান করবেন সাদপন্থীরা। সকালে শান্তিপূর্ণভাবে বের হয়ে গেছেন জুবায়েরপন্থীরা। তারপর প্রবেশ করেন সাদপন্থীরা।
২০১৭ সালের নভেম্বরে এই দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ নেয়। সেই সময় কাকরাইলে দুই দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। শুরু হয় তীব্র উত্তেজনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদের এক অংশে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।