যুক্তরাজ্যের ‘প্রথম মুসলিম’ হিসেবে সমকামী বিয়ে করেছেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবক জাহেদ চৌধুরী। যুক্তরাজ্যের পশ্চিম মিডল্যান্ডের ওয়ালসাল শহরে জাহেদ চৌধুরী ও সিন রোগান বিয়ে করেন। মুসলিম সঙ্গীর অংশগ্রহণে এটিই যুক্তরাজ্যের প্রথম সমাকামী বিবাহ বলে দাবি করা হচ্ছে। খবর টেলিগ্রাফের।
খবরে বলা হয়, ওয়ালসাল শহরের বিবাহ রেজিস্ট্রি অফিসে পাঞ্জাবী-পাজামা পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন জাহেদ ও রোগান। তাদের বিয়ের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে অনলাইনে। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে বিয়ের পরে জাহেদ বলেছেন, ‘গোটা বিশ্বকে দেখাও যে তুমি চাইলে মুসলিম হয়েও সমকামী হতে পারো। ‘
বিয়ের পর ২৪ বছর বয়সী জাহেদ মিডিয়াকে বলেন, পরিবারের কাছ থেকে সহায়তা পেতেন না তিনি। তা ছাড়া স্কুলে লাঞ্ছনার শিকার হতেন জাহেদ। এমনকি স্থানীয় মসজিদে তার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয় বলেও জানান তিনি। পরবর্তীতে জাহেদ নিজের লিঙ্গ পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। তার যৌণগত আচরণ পরিবর্তনের জন্য গার্লফ্রেন্ডের ব্যবস্থা করা হয়, পরিবার তাকে হজ্ব পালনে সৌদি আরবে নিয়ে যান। বাংলাদেশে এনেও ধর্মীয় নিয়ম-কানুন পালনে সচেষ্ট করা হয় তাকে। এক পর্যায়ে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন।
সে সময় রোগানের সাথে দেখা হয় তার। রোগানকে দেখে জীবনের মানে খুঁজে পান তিনি। তারা ২০১৫ সাল থেকে একসাথে থাকা শুরু করেন। পরবর্তীতে জাহেদ গত বছর স্বামী রোগানের জন্মদিনে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
জাহেদের স্বামী ১৯ বছর বয়সী রোগান বলেন, প্রত্যেকটা পদক্ষেপে সঙ্গীর পাশে দাঁড়াবেন তিনি। তিনি বলেন, সমকামী হওয়া ভুল কিছু নয়। এটা কোন ধাপ নয়। মানুষের শুধু কিছুটা সমর্থণ দরকার।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে ব্রিটেনের মুসলিম কমিউনিটিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেক মুসলিম পরিবার চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এছাড়া বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনের মুসলিম কাউন্সিল, যা ৫শ’ টিরও বেশি সংগঠন ও মসজিদের প্রতিনিধিত্ব করে, ২০১৩ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে চার্চ অফ ইংল্যান্ডের যৌন বিবাহের বৈধতার বিরোধীতা করে। এদিকে স্কটল্যান্ডে একই বিবাহের বৈধতা পায় কিন্তু উত্তর আয়ারল্যান্ডে বেআইনী হয়, যেখানে সরকার ও ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন বিরোধী দলের মধ্যে জোটের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশের প্রেক্ষিতে প্রচারাভিযানীরা পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছে।