বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক আগৈলঝাড়া ও বর্তমানে বরগুনা সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী তারেক সালমনকে কোনও হাতকড়া পরানো হয়নি বলে বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার অ্যাসোসিয়েশনের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। অবশ্য সাতক্ষীরার জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি সাতক্ষীরাকেও শুক্রবার সন্ধ্যায় তারেক সালমন নিশ্চিত করেন যে, আদালতে পুলিশ তাকে কোন হাতকড়া পরায়নি।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ইউএনও’র জামিন মঞ্জুর/ না-মঞ্জুরের বিষয়টি বিভিন্ন মহল, গণমাধ্যম ও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, ভিত্তিহীন অভিযোগে কর্মরত একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের এবং পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট মহলগুলোর উদাসীনতার কারণে তাকে যে ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য ও নিন্দনীয়। গাজী তারেক সালমনের প্রতি পূর্ণ সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
বিভিন্ন মহল থেকে ‘পুলিশ কিভাবে মামলা নিল? পুলিশ মামলা নিল কেন? পুলিশ তাকে কেন গ্রেফতার করল?’—এ ধরনের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, এই বিষয়ে কোনও থানায়ই কোনও মামলা রুজু হয়নি এবং পুলিশও গাজী তারেক সালমনকে গ্রেফতার করেনি। প্রকৃত তথ্য হলো কথিত অবমাননার অভিযোগে অভিযোগকারী বিজ্ঞ আদালতে দ. বি. ৫০১ ধারায় সিআর মামলা নং ৪২৭/১৭ রুজু করেন। সিআর মামলা রুজু করলে আদালত থেকে তাকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করা হয়। সমনের পরিপ্রেক্ষিতে গাজী তারেক সালমন আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করেন। এক্ষেত্রে কোনও পর্যায়েই পুলিশের কোনও ভূমিকা রাখার অবকাশ ছিল না।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনও কোনও গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ‘পুলিশ কেন তাকে হাতকড়া পরালো?’ বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গাজী তারেক সালমনকে কোনও হাতকড়া পরায়নি পুলিশ। গাজী তারেক সালমানের সঙ্গে পুলিশের ছবি ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হবে। যেহেতু এ বিষয়ে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওসহ নানা ধরনের দালিলিক প্রমাণ রয়েছে, সেহেতু কোনও ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির অবকাশ নেই। কারও কারও বক্তব্যে পুলিশ রেগুলেশনের ৩৩০ বিধি অমান্যপূর্বক গাজী তারেক সালমনের ওপর বল প্রয়োগ করে টেনে-হেচঁড়ে কোর্ট হাজতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে, যা তথ্য নির্ভর নয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, পুলিশ এক্ষেত্রে কোনোভাবেই বল প্রয়োগ করা হয়নি কিংবা টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে কর্তৃক বিবিসিকে দেওয়া গাজী তারেক সালমনের বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো—‘আমাকে ঠিক গ্রেফতার করা হয়নি, আমার জামিনের আবেদন কোর্টে না মঞ্জুর করা হয়। তারপর আমাকে কোর্টের গারদ খানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমাকে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। তখন আমি পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম, দয়া করে আমাকে একটু সময় দিন, আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানোর সুযোগ দিন। আমার অনুরোধে পুলিশ আমাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দেয়।’