প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের গঠনমূলক সমালোচনা হতে পারে। তবে এ রায় নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত সরকার বা বিরোধী দলের ফাঁদে পা দেবেন না।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে রাজনীতি না করারও আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।
গতকাল বুধবার আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। যেকোনো রায় প্রকাশিত হওয়ার পর যে কেউ সে রায় নিয়ে সমালোচনা করতে পারবেন।’
বুধবার বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জাতীয় আইন কমিশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বি এম খায়রুল হক এ কথা বলেন।
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি ষোড়শ সংশোধনীর রায় পড়ে দেখেছি যে এই রায়ে অনেক অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য রয়েছে। যেসব কথার কোনো প্রয়োজনই এ রায়ে ছিল না। ওই রায়ে পার্লামেন্ট মেম্বারদের ইমম্যাচিউর বলা হয়েছে, যেটা এখানে বলার কোনো দরকার ছিল না।’
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল প্রসঙ্গে এ বি এম খায়রুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনতে হলে আবারও সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধানে যেহেতু সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ছিল না, সেহেতু এটা রাখা সংবিধান পরিপন্থী।’
এ বি এম খায়রুল হক আরো বলেন, ‘এই প্রথম কোনো রায়ে দেখলাম, যেখানে অরিজিনালকে বাদ দিয়ে মার্শাল লর প্রভিশনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা ভুল করলে সুপ্রিম কোর্ট দেখে সংশোধন করবেন। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট (বিচারপতিরা) ভুল করলে আমরা যাব কোথায়?’
এ রায়ে সংসদ সদস্যদের হেয় করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৭৯৯ পৃষ্ঠার ওই রায় প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত রায় অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত করা হয়।