সম্প্রতি ইরান মহাকাশে স্যাটেলাইট বহনকারী রকেট পাঠানোর ঘটনায় দেশটির ছয়টি কোম্পানির উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিল আমেরিকা। আর তাতে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ইরানের হুঁশিয়ারি, কোন শক্তিই তাদের দমাতে পারবে না।
একদিকে যেমন মিসাইলের উন্নতি করা হবে, অন্যদিকে আবার এমন আধুনিক রকেট এবং ইঞ্জিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে বলে পাল্টা জানিয়ে দেয় ইরান। এরই জের ধরে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সম্প্রসারণে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ইরান। পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে তেহরান-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আরো তলানিতে ঠেকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিবিসি জানাচ্ছে, সামরিক তৎপরতা বাড়াতে ৫০ কোটি ডলারের একটি বিলে একচেটিয়া সমর্থন করেছেন ইরানি পার্লামেন্টের সদস্যরা।
ইরানের জাতীয় আইনসভা মজলিস স্পিকার আলি লারিজানি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার তৎপরতা এবং অ্যাডভেঞ্চারের জবাব দিতে এই পদক্ষেপ। এর পরিণতি ঘিরে আলোড়িত দুনিয়া। কারণ মিসাইল পরীক্ষা ও পরমাণু কর্মসূচিতে ইরানের অবস্থানের ঘোর বিরোধী আমেরিকা। তাতে তোয়াক্কা না করেই উত্তর কোরিয়ার স্টাইলে এবার ইরান সরকার ক্ষেপণাস্ত্র সম্প্রসারণে জোর দিতে চলল। গত জানুয়ারিতে একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর আমেরিকা জুলাই মাসে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসায়। পারমানবিক অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধের শর্তে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে ২০১৫ সালে বিশ্বের ছটি দেশের সাথে ইরান একটি মীমাংসা চুক্তি করে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তির ঘোর বিরোধী।
তাছাড়া ইরান কখনো পশ্চিমের কোন দেশকে নিজেদের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনের অনুমতি দেবে না বলেও জানিয়েছেন দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র বিমান শাখার শীর্ষ পর্যায়ের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ। সম্প্রতি ইরানের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনের বিষয়ে আমেরিকা তেহরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশ পায়। এই প্রসঙ্গে জেনারেল হাজিজাদেহ বলেন, এর জবাব খুব পরিষ্কার এবং তা হচ্ছে- তেহরান সে সুযোগ কাউকে দেবে না।
মার্কিন কর্মকর্তরা জুলাই মাসের শেষ দিকে বলেছিলেন, ইরান ঠিকমতো পরমাণু সমঝোতা মেনে চলছে কিনা, তা যাচাই করার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইরানের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করতে চায়। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশ হতেই মার্কিন আধিকারিকদের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনের সমস্ত সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন ইরান সেনা কমান্ডার।