বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে মানবিক বিপর্যয় আরো ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএফআরসির এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মার্টিন ফ্যালার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমেই বাড়ছে। এ অঞ্চলে বহু বছরের মধ্যে এটিই প্রথম বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা হতে চলেছে। প্রলয়ঙ্করী এ বন্যার হাত থেকে লাখ লাখ মানুষকে বাঁচাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
ফ্যালার বলেন, বন্যায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে লাখ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। এমনকি দূষিত পানির কারণে নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ বন্যা পরিস্থিতি এরই মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ১৯৮৮ সালের মহাপ্রলয়ঙ্করী বন্যাকে অতিক্রম করছে এই বন্যা।
ফ্যালার আরো বলেন, ‘বন্যায় বাংলাদেশ ও নেপালের এক-তৃতীয়াংশের বেশি ডুবে গেছে। আমাদের শঙ্কা হচ্ছে, সামনের দিন ও সপ্তাহগুলোতে এই মানবিক বিপর্যয় আরো ভয়াবহ আকার নেবে।’
ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণে নেপালের অনেক এলাকায় ফসল কাটা থেকে বিরত রয়েছেন কৃষকরা। বিভিন্ন গ্রাম ও সম্প্রদায়ের মানুষজন খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
নেপাল রেডক্রস সোসাইটির সেক্রেটারি জেনারেল দেব রত্ন ধাকওয়া বলেন, ভয়াবহ এই বন্যায় দেশটিতে ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৩৩ জন মানুষ এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন।
দেবরত্ন আরো বলেন, রেড ক্রস সোসাইটির পাঁচশর বেশি স্বেচ্ছাসেবী দেশটিতে বন্যার্তদের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে। তারা বন্যাকবলিত মানুষের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়, খাবার ও পানির ব্যবস্থা করছে।
আইএফআরসি জানায়, নেপালে তারা বন্যার্তদের সহায়তার জন্য দুর্যোগে জরুরি ত্রাণ তহবিল (ডিআরএফএফ) থেকে পাঁচ লাখ সুইস ফ্রাঁ দিয়েছে।
ভারত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে। দেশের প্রায় ৩০ লাখ ৯০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।
ভারতের উত্তরাঞ্চলে এক কোটি ১০ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামীতে ওই অঞ্চলে আরো ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
ভারতীয় রেডক্রস এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা বন্যার্তদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছেন।
ভারতের পূর্বাঞ্চলে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য আইএফআরসি গত জুলাইয়ে তিন লাখ ২০ হাজার সুইস ফ্রাঁ সহায়তা দিয়েছে বলেও জানানো হয়।