আসাদুজ্জামান : বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের তদন্তে শিক্ষাদস্যু হিসেবে চিহ্নিত সাতক্ষীরার অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামানকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে তারই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। সোমবার দুপুর দুইটার দিকে কলেজ চত্বরে এ মারপিটের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক সুশান্ত মন্ডল জানান, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের ডিগ্রি সেকশনে তারা ২২জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। যাদের প্রত্যেকেই ১৫-১৬ বছর ধরে চাকুরি করছেন। প্রত্যেকের কাছ থেকেই চাকুরিতে যোগদানের সময় অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান ২-৩ লক্ষ করে টাকা নিয়েছেন। এরপর এমপিওভুক্তির জন্য ফের প্রত্যেকের কাছ থেকে আরো ৫০-৬০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। টাকা নেওয়া হয়েছে ডিগ্রি সেকশনের স্বীকৃতির নাম করেও। কিন্তু এত দিনেও ডিগ্রি সেকশন স্বীকৃতি পায়নি। হঠাৎ করে অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান ডিগ্রি সেকশনের খাতা-পত্র উদাও করে দেন। কলেজের কোথাও ২২জন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম পর্যন্ত নেই। ১৫ বছরের হাজিরা খাতা তো দূরের কথা। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামানের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডিগ্রি সেকশনের শিক্ষক-কর্মচারীরা তার উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়।
আহত অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান জানান, দুপুরে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ করেই ক্যাম্পাসের পাশে তার উপর সুশান্ত মন্ডল, নির্মল বৈরাগী, রুহুল আমিন, আবু সুফিয়ান, আব্দুল কাদের, আব্দুল আহাদ, জাহাঙ্গীর নামের ১০-১২জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজ নয়, এই কুখ্যাত শিক্ষাদস্যু আক্তারুজ্জামান জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে শিক্ষার্থীহীন ১৮টি কলেজ গড়ে তুলেছেন। আর শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির নামে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ৭ থেক ৮ কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্য করেছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি জেলাব্যাপী শিক্ষাদস্যু আক্তার নামে আলোচিত হন। তার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে শতাধিক চাকুরি প্রার্থী।
সাতক্ষীরার কুখ্যাত শিক্ষাদস্যু আক্তারুজ্জামানকে পিটিয়েছে শিক্ষক-কর্মচারীরা
পূর্ববর্তী পোস্ট