প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অবস্থা খুবই অমানবিক। বাংলাদেশ তাদের পাশে থাকবে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনে খাবার ভাগ করে খাওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে দশম জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমারে এখনো দূর থেকে দেখা যায় আগুন জ্বলছে। তাদের আগুন দেওয়া থামেনি।’
অধিবেশনের সমাপনী এ ভাষণে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশ তাদের জন্য কী করছে তা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসা বিশাল সংখ্যায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে কীভাবে রাখা হবে সেটাই এখন তাঁর সরকারের কাছে বড় প্রশ্ন। নিজ চোখে দেখে আসা রোহিঙ্গাদের অবস্থার বর্ণনায় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট মেয়ে, তার ছোট্ট ভাইটাকে নিয়ে চলে আসছিল। ভাইটা যে কোথায় হারিয়ে গেছে? সে বলতে পারে না। এ ধরনের করুণ কাহিনী ওখানে গিয়ে আমার শুনতে হয়েছে। মাননীয় স্পিকার, এটা আমাদের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব না। কারণ আমরা তো আপনজন হারিয়েছি। এই দুর্দশা দেখে যতই আমাদের কষ্ট হোক না কেন, যদি প্রয়োজন হয় আমরা আমাদের খাবার ভাগ করে খাব তাদের সঙ্গে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা গড়তে তিনি নৌবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও সরকার সজাগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি আমার দেশবাসীকে বলব, এরা বিপদে পড়ে আশ্রয় নিয়েছে। এই জনস্রোতের সাথে আবার যারা মূল দোষী, যারা এ ধরনের ঘটনার সূত্রপাত করেছে, তারা যেন এখানে কোনোভাবে ঢুকতে না পারে, আশ্রয় না পায়। আর যারা ত্রাণ নিয়ে যাবে সেই ত্রাণে কী কী আছে সেটাও আমি বলেছি, স্ক্যান করতে, দেখতে। আর ত্রাণ দিয়ে যাঁরা চলে আসবেন সেখানেও গাড়িগুলি আমি পরীক্ষা বলছি সেখানে কী নিয়ে আসছেন, কোথায় নিয়ে আসছেন, কী করছেন সেগুলিও যেন ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।’
তা ছাড়া দেশে খাদ্য সংকট হতে পারে এমন তথ্য নাকচ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের খাদ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেওয়া হবে না। আর কেউ খাদ্যের জন্য কষ্ট পাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আশার কথা সারা বিশ্ব রোহিঙ্গা ইস্যুতে জেগে উঠছে।