দেশ থেকে একের পর এক শুভেচ্ছা পাচ্ছেন জাফর ইকবাল। তাঁর ব্যক্তিগত ঝলকেই ভারতের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ৪-৩ গোলের জয়ের ম্যাচে নিজে জোড়া গোল করেছেন, সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন আরও একটি। এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পর শুভেচ্ছার জোয়ারে জাফরের তো ভেসে যাওয়ারই কথা। স্বাভাবিকভাবে জয়ের নায়ক হলে যা হয়ে থাকে আর কি।
ভারতের বিপক্ষে জোড়া গোল নিয়েই থামতে চান না যুবদলের এই লেফট উইঙ্গার। সর্বোচ্চ গোলদাতার সঙ্গে হতে চান টুর্নামেন্ট-সেরা খেলোয়াড়ও। এই চাওয়া নিজের জন্য নয়, তিনি গোল পেলে যে জিতবে বাংলাদেশ। গোলের ক্ষুধা তাই বাড়িয়ে নিচ্ছেন। নিজের সামনে দাঁড় করাচ্ছেন কঠিন চ্যালেঞ্জ।
থিম্পু থেকে সে কথাই বললেন জাফর, ‘আমার গোলে বাংলাদেশ জিতেছে। এর চেয়ে আর বড় আনন্দ কী হতে পারে! এখন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হতে চাই। পরের তিন ম্যাচে গোল করতে চাই আরও ছয়টি। আমার পাশে যারা খেলে, তাদের সহযোগিতায় এই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব।’
গতকাল ভারতের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে পিছিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচে বাংলাদেশের আশা যখন আইসিইউতে, তখনই গোল করে যেন দলকেও জাগিয়ে তুললেন জাফর। ৫৫ মিনিটে স্বাধীনের কর্নার থেকে হেডে করেছেন প্রথম গোল, ৩-১। আবার যোগ করা সময়ে জয়সূচক শেষ গোলটিও তাঁর। এবারও স্বাধীনের কর্নার, জাফরের ট্রেডমার্ক হেডার। ৪-৩!
এর কয়েক মিনিট আগেই বাঁ প্রান্ত থেকে ঠিকানা লেখা ক্রসে সুফিলকে দিয়ে করিয়েছেন দলের তিন নম্বর গোলটি, যে গোলে সমতা ফিরিয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় এই জয়ের প্রতিটি কণাতেই যেন লেখা লেফট উইঙ্গার জাফরের নাম।
কর্নার নিয়ে মাঠেই নিজের রণকৌশল বদলে ফেলেছিলেন। তাতেই মিলেছিল সুলফ। জাফর বললেন, ‘খেয়াল করে দেখবেন, প্রথমে কর্নার আমি নিচ্ছিলাম। কিন্তু কেউ হেড করতে পারছিল না। পরে আমি স্বাধীনকে কর্নার নিতে পাঠাই। ওর সঙ্গে ছকটা ঠিক করে নিই আমি প্রথমে কোথায় দাঁড়ালে ও বল কোথায় ফেলবে। ততক্ষণে আমিও জায়গা বদল করে নেব। এই ছিল গোপন ছক।’ পুরোটা আর খুলে বললেন না। এই গোপন অস্ত্র সামনেও তো ব্যবহার করতে হবে!
এ যেন শেষ দৃশ্যে ভিলেনের ডেরায় বন্দী মা আর নায়িকাকে উদ্ধার করার ক্লাইম্যাক্স! কালকের ম্যাচ তো তা-ই বলল! আর সেখানে জাফর ইকবাল সত্যিকারের নায়ক।