কক্সবাজারের ইনানীতে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকা ডুবে ৬০ জনের অধিক মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
সংস্থাটির এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ আজ শুক্রবার জানিয়েছে, নৌকাডুবির ঘটনায় ২৩ রোহিঙ্গার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া আরো ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছে। তারা হয়তো মারা গেছে। এ ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৬০ জন হতে পারে।
ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা এক রোহিঙ্গা বৃহস্পতিবার আইওএমকে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের বহনকারী ওই নৌকায় ৫০ শিশুসহ প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা ছিল। তারা সবাই সহিংসতার শিকার হয়ে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসছিল। কিন্তু সমুদ্রে পানির প্রচণ্ড তোড়ের মুখে পড়ে নৌকাটি উল্টে যায়।
আইওএমের মুখপাত্র বলেন, ‘তারা সারা রাত সাগরে কাটিয়েছে, তাদের কাছে কোনো খাবার ছিল না।’
রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে সহিংসতার শিকার হয়ে কয়েক সপ্তাহে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। গত ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার জের ধরে রাখাইনজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ বলেছেন, বিশ্বকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শরণার্থী পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে হবে। এটি মানবিক, মানবাধিকারের বিপর্যয়। তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাখাইনে সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য শিগগিরই জাতীয়ভাবে যাচাইকরণ প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার।
তবে রোহিঙ্গাদের অনেকেই ‘ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন প্রসেস’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এই প্রক্রিয়া মিয়ানমারের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টিকে কঠিন করতে পারে।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে চার লাখ ৮০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা ও নিন্দার মুখে পড়লেও এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মিয়ানমার সরকার।