দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দুর্দশা চলছেই বাংলাদেশের। প্রথম টেস্টে ৩৩০ রানের বড় হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারল টাইগাররা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৫৭৩ রানের জবাবে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ১৪৭ রানে। ফলোঅনে পড়ে আজ দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানেই অলআউট হয় সফরকারী দলটি। ইনিংস ও ২৫৪ রানের হারে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ লজ্জা পেলেন মুশফিকরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রোটিয়া পেসারদের জুজু চেপে ধরে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। রাবাদা-ফেলুকায়োদের দাপটে স্বাভাবিক খেলাটাও খেলতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। সৌম্য, মুশফিক, মুমিনুলরা সবাই ব্যর্থ হয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের প্রথম টেস্টে দলে জায়গা করে নিতে পারেননি সৌম্য। চলমান দ্বিতীয় টেস্টে জায়গা পেয়েছিলেন তামিম ইকবাল ইনজুরিতে পড়ার কারণে। কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করার সে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না বাঁহাতি এই ওপেনার। প্রথম ইনিংসে ৯ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে সাজঘরে ফিরলেন মাত্র ৩ রান করে। কাগিসো রাবাদার স্টাম্পের বাইরের একটি বলে ব্যাট ছোঁয়াতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন দ্বিতীয় স্লিপে।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আউট করতে টানা ছোট লেন্থের বল করে যান দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। সেই ফাঁদেই পা দেন মুমিনুল। রাবাদাকে হুক করতে গিয়ে কেশব মহারাজের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ১১ রান করেন মুমিনুল।
ইমরুল কায়েস প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও আস্থার সঙ্গেই খেলছিলেন। তবে ১৭তম ওভারে অলিভিয়ের বলটা ইমরুলের ব্যাটে লাগে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে জমা পড়ে। আউট হওয়ার আগে ৩২ রান করেন টাইগার ওপেনার।
ভালো খেলছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। প্রোটিয়া পেসারদের গোলাসম বাউন্সেও বুক চিতিয়ে লড়াই করেন তিনি। তবে ওয়েইন পারনেলের বলটা ব্যাটে লাগাতে পারেননি। সেটি আঘাত করে মুশির প্যাডে। বাংলাদেশ অধিনায়ককে লেগ বিফোর আউট ঘোষণা করেন আম্পায়ার। ২৬ রান করেন মুশি।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে টেনে নেওয়া লিটন দাস দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৮ রান করে ফেলুকায়োর বলে বোল্ড হন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। এরপর সবোর্চ্চ ৪৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফেরান রাবাদা। দলীয় ১৪৫ রানে ফিরে যান সাব্বির রহমান। এর ফলেই বাংলাদেশের ইনিংস ব্যবধানে হারটা নিশ্চিত হয়ে যায়। এর পর রুবেল, তাইজুলদের ফেরাতে খুব একটা সময় নেননি রাবাদারা। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৭২ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেটে নেওয়া রাবাদা এই ইনিংসে নেন পাঁচ উইকেট। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো দশ বা এর বেশি উইকেট নিলেন রাবাদা। এ ছাড়া ফেলুকায়ো নেন তিন উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে প্রায় একাই লড়াই করেছেন লিটন দাস। খেলেছেন ৭০ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটি ইমরুল কায়েসের, ২৬ রানের। শেষ পর্যায়ে ১২ ও ১০ রানের ছোট্ট দুটি ইনিংস এসেছিল তাইজুল ইসলাম ও রুবেল হোসেনের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো ব্যাটসম্যানই পেরোতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ডিন এলগার, এইডেন মার্করাম, হাশিম আমলা ও ফাফ দু প্লেসির শতকে ভর করে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকা সংগ্রহ করেছে ৫৭৩ রান।