ডেইলি সাতক্ষীরা ডেস্ক: কিছুদিন আগে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ জন আ.লীগ দলীয় কাউন্সিলর একযোগে একটি দরখাস্তে স্বাক্ষর করেন যেখানে বলা হয়েছিল বিএনপি নেতা ও সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের করা একটি মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আ.লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এভাবে কেউ বলতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে যেসব নেতারা বিস্ময় প্রকাশ করে ঐ কাজের সমালোচনা করেছিলেন তাদের অনেকেই এবার নিজেরাই সম্প্রতি সাতক্ষীরায় জামাতের অন্যতম অর্থ যোগানদাতা হিসেবে সুপরিচিত সানি খালেকের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলার বিরোধিতা করে মামলা থেকে খালেককে অব্যাহতি চেয়ে করা প্রত্যয়ন পত্রে স্বাক্ষর করেছেন। এ ঘটনায় প্রশাসন এবং জেলা আ.লীগ ও সরকারের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন যখন নতুন পুলিশ সুপার মো: আলতাফ হোসেন জামাতের নাশকতায় অর্থযোগান দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করেছেন ঠিক তখনই সরকারি দলের নেতাদের এ ধরনের ভূমিকা পুলিশের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
বুধবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নাশকতার ২ টি মামলায় জামিন পেয়েছেন বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী ও জামাতের নাশকতায় অর্থ যোগানদাতা সানি খালেক। আর তার জামিনের জন্য আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রের সাথে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজস্ব দেয়া প্যাডে একটি প্রত্যয়ন পত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যয়ন পত্রটিতে সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবুর পাশাপাশি আরও স্বাক্ষর করেছেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা পৌর আ.লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আবু সায়ীদ, সদর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি এস এম শওকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাহজাহান আলী, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম মোর্শেদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিট কমান্ডার মোঃ মোশাররফ হোসেন (মশু)।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম জানান ৪নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষর করায় তিনি অনুস্বাক্ষর করেছেন মাত্র।
অন্যদিকে আসাদুজ্জামান বাবু গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, সানি খালেক কোন অবস্থায় জামাতের সাথে সংশ্লিষ্ট নন এবং তিনি একজন সৎ ব্যবসায়ী। এদিকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, সানি খালেকের জামিনের কাগজপত্র বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত কারাগারে পৌঁছেনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদর থানার এ এস আই সেলিম রেজা বাদি হয়ে গত ২৭ জুলাই সানি খালেকের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। সানি খালেক সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়েরকৃত জি আর ৩৯৭/১৬ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও জি আর ৩৬৯/১৬ মামলার সন্দিগ্ধ আসামি।
মামলা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুলাই পুরাতন সাতক্ষীরায় এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সানি খালেকসহ জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠক করছিল। এখবর পেয়ে পুরাতন সাতক্ষীরা ফাঁড়ির ইনচার্জ এ এস আই সেলিম রেজা ও সঙ্গীয় ফোর্স ওই স্থানে অভিযান চালায়। এসময় সানি খালেক ও জামাত নেতা নুরুল ইসলামকে আটক করা গেলেও বাকি আসামিরা পালিয়ে যায়।