ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের কঠোর সমালোচনা করলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। স্বেচ্ছাসেবক লীগকে তিনি অভিহিত করলেন ‘সাইনবোর্ড সর্বস্ব’ সংগঠন হিসেবে। আর ছাত্রলীগকে নিয়ে বললেন, ‘আওয়ামী লীগ ও সরকার খেটেখুটে যে সুনাম অর্জন করে, তা ছাত্রলীগের একদিনের অপকর্মেই ধ্বংস হয়ে যায়।’
বুধবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলী ও দলের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের এক যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বেই এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত না করায় সভায় সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ এখন সাইনবোর্ড সর্বস্ব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই দলের নেতা সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ। তোমাদের এর আগেও পাঁচবার সম্মেলন করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তোমাদের সারাদেশে অনেক জেলাতেই কমিটি আছে দুই জনের। কোথাও আছে আহ্বায়ক কমিটি। সামনে নির্বাচন। এসময় সহযোগী সংগঠনগুলো এমন অসংগঠিত হয়ে পড়াটা ঠিক নয়।’
এসময় ওবায়দুল কাদেরকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার বলেন, ‘সম্মেলনের তারিখ আপনেই ঠিক করে দিন।’ জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি কেন ঠিক করে দেবো? তোমরা ঠিক করে আমাকে জানাও। আমি নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) জানাবো।’
এর মধ্যে সভাস্থলে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন প্রবেশ করলে তাদের প্রতি ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও সরকার খেটেখুটে যে সুনাম অর্জন করে, তা ছাত্রলীগের একদিনের অপকর্মেই ধ্বংস হয়ে যায়।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘সিলেটে আমরা আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহের মতো একটি বড় কর্মসূচি পালন করে আসলাম। এরপরই সেখানে ছাত্রলীগের গণ্ডগোলে দুই জন মারা গেলো। এটি আমাদের দলের জন্য দুর্নাম।’ তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের কারণেই আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতা হারায়।’
দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, ওবায়দুল কাদের এভাবে প্রায় ১০ মিনিট ধরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রতি বিষোদগার করেন। পরে তিনি মেয়াতোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের নির্দেশ দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘ঐতিহাসিক দলিলে’র স্বীকৃতি দেওয়ায় সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে এই সভায়।
পূর্ববর্তী পোস্ট