আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন নিয়ে এরইমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। কে হচ্ছেন নতুন মেয়র, কে শেষ করবেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজগুলো, সেসব নিয়ে আলোচনা এখন গলির মোড়ে চায়ের দোকান থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে।
দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও শুরু হয়ে গেছে নানা হিসাব-নিকাশ; চলছে নানামুখী তদবির। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ এখনি মন্তব্য না করলেও ঘুরে ফিরে আসছে কয়েকটি নাম।
এ উপনির্বাচনকে বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে একটি ট্রাম্পকার্ড হিসেবে দেখছে। এর মাধ্যমে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পাশাপাশি সাংগঠনিক ঐক্যও পরীক্ষা করে দেখতে চায় দলটি। এই উপনির্বাচনের ফলাফল একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে এমনটাই মনে করছে দলটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়। তাই এখানে শক্তিশালী প্রার্থী দেওয়ার পাশাপাশি দলের সকল উইং ব্যবহার করে ফলাফল নিজেদের ঘরে তুলতে চায় দলটি।
আর এক্ষেত্রে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর নাম উঠে এসেছে আলোচনায়। তবে তিনি নির্বাচনে না এলে তার পুত্র তাবিথ আউয়াল সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ে শীর্ষে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দলটির শীর্ষ পর্যায়ে এরইমধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে।
অন্যদিকে সরকারের শেষ সময়ে এ উপনির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারাও এমন কাউকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাইছেন যিনি জনপ্রিয়তা ও ভোটব্যাংকের ভিত্তিতে সবার থেকে এগিয়ে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় প্রথমেই উঠে আসছে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হকের নাম। এছাড়া আনিসুল হকের একমাত্র ছেলে নাভিদুল হকও রয়েছেন এ আলোচনায়। তবে মেয়র পরিবারের বাইরেও কয়েকজনের নাম ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে।
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের নামও প্রার্থী বাছাইয়ে দলের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের বিশাল ভোটারগোষ্ঠী ও ওই অঞ্চলের রাজনীতিতে প্রভাব থাকার কারণে আলাউদ্দিন আহমেদ নাসিমের নাম আলোচনায় উঠে আসছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্বোডিয়া থেকে ফিরলেই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন দলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা।
ঢাকা উত্তরের মেয়র পদ শূন্য হওয়ায় আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে উপনির্বাচনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৯০ দিনের মধ্যেই ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন আয়োজন করতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। মেয়র পদ শূন্য ঘোষণার প্রজ্ঞাপন হাতে পেলেই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি।